সম্পাদকীয়

‘ইতিহাস তথ্য ও তর্ক’-র নব নব প্রচেষ্টা অব্যাহত
(১)
বাংলায় জনপ্রিয় ইতিহাস চর্চার প্রয়োজনে ‘ইতিহাস তথ্য ও তর্ক’ ফেসবুক গ্ৰুপ তৈরি হয়েছিল সেই ২০১৮ সালে। এই গ্ৰুপ-এর মূল অভিমুখ তথ্য নির্ভর, সাম্প্রদায়িকতা বর্জিত ইতিহাস আলোচনার দিকে। ‘ইতিহাস তথ্য ও তর্ক’ গ্রুপ দুই বাংলার অজস্র শুভানুধ্যায়ীর প্রশ্রয়ে বিরাটাকারে ডালপালা মেলেছে। বিভিন্ন ধরনের প্রবন্ধ সেখানে নিরন্তর লেখা হচ্ছে। আজ তার সদস্য সংখ্যা ১ লক্ষ ১১ হাজার।
এই গ্ৰুপ-এর সদস্যদের এক বড়ো অংশই পাঠক, আবার লেখকও আছেন প্রচুর। সদস্যদের মধ্যে আছেন প্রারম্ভিক ইতিহাস চর্চাকারী, ইতিহাস আগ্রহী, নতুন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ও পুরানো ঐতিহ্যের মিলনে ব্যগ্র সতর্ক লেখক। যারা বহুদিন আগে ইতিহাস চর্চা করতেন—আবার ঝালিয়ে নিতে চান, যারা ইতিহাস নিয়ে আন্তরিক চর্চা করেন তাদের সকলের জন্য আলোচনার পরিমণ্ডল গড়ে তুলতে আমরা চেষ্টা করি।
(২)
তারপরে ইতিহাসের পোর্টাল-এর প্রয়োজন হল। সেই ২০২০ সালে ‘ইতিহাস আড্ডা’ পোর্টাল-এর যাত্রা শুরু হল। প্রথম দিকে ‘ইতিহাস তথ্য ও তর্ক’ ফেসবুক গ্রুপ থেকে বাছাই করা প্রবন্ধ এখানে সংরক্ষিত হয়েছে। অবশ্য সবসময়েই পোর্টালে প্রতি সপ্তাহে নতুন নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। আজ এই পোর্টাল-এ লেখকের সংখ্যা ৯১।
এই সব কাজ শুরু করা সহজ, বজায় রাখা কঠিন। চালিয়ে যাওয়া কঠিন। বিশেষ করে যদি অর্থের বিনিময়ে সাহায্য না কিনে দৈনন্দিন শত ব্যস্ততার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সেই কাজ নিজেদের হাতে করে যেতে হয় তবে তাতে প্রয়োজন হয় দীর্ঘমেয়াদি ধৈর্য, পর্যাপ্ত নিষ্ঠা আর সেই কাজের প্রতি ভালোবাসা। এইভাবেই মুষ্টিমেয় কয়েকজনের স্বার্থহীন ধারাবাহিকতা ও নিয়মনিষ্ঠার বিনিময়ে আমাদের সকলের এই ‘ইতিহাস তথ্য ও তর্ক’ ফেসবুক গ্রুপ ও ‘ইতিহাস আড্ডা’ পোর্টাল নিয়মিত চলেছে।
(৩)
কয়েকজন পাঠক অনুরোধ করেছেন ‘ইতিহাস আড্ডা’ পোর্টাল-এর পোস্ট তাদের সঙ্গে নিয়মিত শেয়ার করতে। তাই তৈরি হল এক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। ‘ইতিহাস আড্ডা’ গ্ৰুপ-এ এখন নিয়মিত ইতিহাস নিয়ে আলোচনা ও বিতর্ক চলে।
(৪)
সর্বশেষ আরও একটি পর্ব যুক্ত হল ‘ইতিহাস তথ্য ও তর্ক’-র যাত্রায়। আজও বাংলার ইতিহাস নিয়ে যে চর্চা হচ্ছে, তার সিংহভাগ ইংরেজি ভাষায়। বাংলা ভাষায় বাংলার ইতিহাস চর্চার বৃহদাংশ এখনও একই লেখকের মূল ইংরেজি রচনার অনুবাদ বা স্বল্প সংখ্যায় প্রকাশিত বই আর পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধমালার মধ্যে সীমাবদ্ধ।
এই পরিপ্রেক্ষিতে একটি সুখবর। ‘ইতিহাস তথ্য ও তর্ক’-র উদ্যোগে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলাতে। প্রকাশক সেতু প্রকাশনী। এটি আমাদের প্রথম উদ্যোগ (নিশ্চিত থাকুন শেষ নয়)।
বঙ্গ ইতিহাস প্রবাহ
বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের কাছে ইতিহাস নিয়ে নতুন প্রবন্ধ সংকলন উপস্থাপিত করার প্রয়াস সম্পাদকমণ্ডলীর কাছে স্পৃহণীয় বলে মনে হওয়ায় এই গ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগ। এই সংকলন গঙ্গা-পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনার কলরবে মুখরিত বাংলার সার্ধ দ্বিসহস্রাব্দের ইতিহাসের বর্ণময় বৈচিত্র্যের এক উজ্জ্বল প্রতিভাস।
আপনাদের শুভেচ্ছা কাম্য।