মুদ্রণ যুগের ইতিহাস ও সারা ওয়ার্নার
গত দুই দশকে ইউরোপ ও আমেরিকায় (বিশেষত ইংরেজি ভাষায়) বইয়ের ইতিহাস নিয়ে যে ধরণের গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে, সেই আলোচনাই হয়তো পরবর্তী কোন এককালের ইতিহাসের বিষয়বস্তু হবে। অতীতের বইকে আমরা দেখছি নানান দৃষ্টিকোণ থেকে, আমার আজকের যে ইতিহাস নির্মাণের প্রক্রিয়া সেও ক্রমশ ভিন্ন রূপ নিচ্ছে। যেহেতু বইয়ের বিষয়বস্তুর উপর সাহিত্যের সরাসরি দখল, তাই এতদিনের বইয়ের মূল্যায়ন বলতে ছিল মূলত সাহিত্যকেন্দ্রিক। বর্তমানে কাগজ, হরফ, ছাপা, বাঁধাই, বিপণন, এমনকি ছাপা যন্ত্রেরও ইতিহাস খুঁজে দেখা হচ্ছে। কোডিকোলজি বা গ্রন্থবিদ্যা নিয়ে এই সময়ের অনুসন্ধান আমাদের আগ্রহী করে। তেমন কাজে সারা ওয়ার্নার আজ আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত একটি নাম। এই প্রবন্ধে মূলত তার লেখাকে কেন্দ্র করেই বইয়ের ইতিহাসের আলোচনা হবে।
আপনাদের মনে হতে পারে সারা ২০১৯-এ বইয়ের ইতিহাস নিয়ে মাত্র একখানি বই লিখেছেন, ‘Studying Early Printed Books, 1450-1800: A Practical Guide’, তবে এটাই কিন্তু তার সম্বন্ধে বলার সব কথা নয়। তার কাজ নিয়ে জানতে আমাদের কয়েকটি বিষয় সম্বন্ধে কিছু কথা ভেবে দেখতে হবে। যেমন দেখুন, বাংলা ভাষায় সংস্কৃত থেকে আগত পুস্তক-পুস্তিকা বা গ্রন্থ নয়, আবার আরবি ‘কিতাব’ও নয়, আমাদের কাছে সবচেয়ে প্রচলিত শব্দ হল ‘বই’। আরবি বই শব্দটিও বিদ্যাচর্চা সম্পর্কিত অন্য আরবি শব্দের মতই (যেমন – কলম, কাগজ, দোয়াত ইত্যাদি) জনপ্রিয় হয়েছে। ইউরোপেও লাতিন ‘কোডেক্স’ শব্দটির তুলনায় ‘বুক’ শব্দটি ইংরেজিতে বেশি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অতীত ইউরোপের কাছে বই আসলে অনেকটা আমাদের কাছে পুথির মত, হাতে লেখা সময়ের এক অতি পবিত্রবস্তু, ছাপা যুগের থেকে যা সভ্যতার একান্ত প্রয়োজন ও যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
বই নিয়ে বই লেখা – সে কত অতীতের ঘটনা সঠিকভাবে বলা কঠিন। অন্তত সপ্তদশ শতক থেকে জার্মানিতে শুরু হয়ে গিয়েছিল। তার একটা বিশেষ কারণ ছিল। ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের সময় থেকেই জার্মানিতে বই খুব গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। তবে এই সব আলোচনাই ছিল মূলত হাতে লেখা বই, প্যামফ্লেট ইত্যাদি নিয়ে। ছাপা বইয়ের ইতিহাস নিয়ে তেমন আগ্রহ হয়তো দেখা যায়নি। গত শতকের পঞ্চাশের দশকের দুটো বই থেকে এই আলোচনা শুরু করবো। তার প্রথমটি হল স্ট্রেইনবার্গের লেখা (১৯৫৫) ‘Five Hundred Years of Printing’ গ্রন্থটি। স্টেইনবার্গ তার লেখায় অত্যন্ত মৌলিক কিছু কাজ যুক্ত করেন। তিনি শুরু করেন incunabula যুগ থেকে। এই যুগ সম্বন্ধে সামান্য কিছু কথা বলে রাখি। মূলত গুটেনবার্গের ছাপা থেকে ১৫০০ সাল পর্যন্ত সময়কে incunabula যুগ বলা হয়। এই সময় খুব কম বই ছাপানো হয়েছিল, এমন কিন্তু নয়। তবে আজকের বইয়ের বিচারে সেই সংখ্যা বিচার করলে কিছুটা ভুল হবে। এই সময়ের পর থেকেই বইয়ের ব্যাপক উৎপাদন শুরু হয়, যা কিনা শিল্পবিপ্লবের বহুল উৎপাদনের প্রথম পণ্য। সে সময়ের আগের বাস্তব পরিস্থিতি বোঝাতে আপনাকে সরাসরি নিয়ে যাচ্ছি ৫০০ বছর আগের পুরনো কোন এক জার্মান শহরে। আমরা দুজনেই (বেশ মোটা টাকা খরচ করে) একই লেখকের একই বই, এমনকি একই সময়ে মুদ্রিত বই কিনলাম, কিন্তু কি আশ্চর্য! আমাদের দুজনের বইয়ের পৃষ্ঠা সংখ্যায় মিল নেই! এমনকি কিছু অক্ষরের কালির রঙও আলাদা হতে পারে। ইতালি থেকে যদি কাগজ না আসে তো আপনার বই কিছুটা কাগজ আর কিছুটা ভেলাম (পার্চমেন্ট সাধারণত নয়, কারণ তাতে কালি ধরে রাখতে পারে না) দিয়ে তৈরি আর আমার বই পুরোটাই হয়তো লেড পেপারে (কারণ তখনও ওয়েভ পেপার আসেনি)। ছবির রঙচঙ, নক্সা যে আলাদা হবে তা না দেখেই ধারণা করা যায়।
তাহলে কী বোঝা গেল? আমি আপনি সে সময় একই বই কিনলেও দুটো কপি অনেকটাই আলাদা হবার সম্ভাবনা ছিল, অর্থাৎ প্রতিটি বই ছিল বিশেষ। একটি বইয়ের ছাপার দিকে যতটা গুরুত্ব দেওয়া হত, আরও অনেককিছুর প্রতিই তেমন লক্ষ্য করা হত। স্ট্রেইনবার্গ এমন নানান দিক তুলে ধরেছেন। তিনি ইংল্যান্ড, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন, পর্তুগাল, গ্রিক ও হিব্রু ছাপা নিয়ে আলোচনা করেছেন। বইয়ের প্রকাশনা ও বিপণন নিয়েও সংক্ষিপ্ত উল্লেখ করেছেন।
দ্বিতীয় বইটির লেখক বিখ্যাত ফরাসি ঐতিহাসিক ল্যুসিয়ে ফেহ্রে, যাকে আমরা মূলত মনে রাখি ফরাসি আনল গোষ্ঠির ইতিহাসচর্চার অন্যতম প্রবক্তা হিসেবে। তিনি ও হেনরি মার্টিন যৌথ ভাবে তাঁর জীবনের শেষ বইটি লিখে যান বইয়ের ইতিহাসের উপর (L’apparition du livre – নামে 1958 সালে ফরাসি ভাষায় প্রকাশিত হয়। পরে ১৯৭৬ সালে ইংরেজিতে অনুদিত হয় The Coming of the Book: The Impact of Printing 1450–1800 নামে)। এই বইটি উল্লেখের বিশেষ কারণ হল, যদি লক্ষ্য করেন সারা-এর বই এবং এই বইটির সময়কাল একই। ফলত আমরা দুটো বই পাশাপাশি দেখলেই গত ষাট বছরে বইয়ের ইতিহাস লেখার ক্ষেত্রে কি ধরনের পরিবর্তন হয়েছে সহজে বুঝতে পারবো।
কিন্তু এই লেখাটিকে আপনার ধৈর্যের মধ্যে রাখতে সেই তুলনামূলক আলোচনায় যাচ্ছি না। বরং সারা ওয়ার্নারের লেখায় নতুন কি পেলাম তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখছি। সারা প্রথম জীবনে নারী ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেন। তার থিসিস পেপারটি ও প্রথম বইয়ের বিষয় ছিল শেক্সপিয়ার সাহিত্য নিয়ে। এই সুবাদেই তিনি পুরানো বই দেখতে শুরু করেন ও গত প্রায় দশ বছর পুরানো ছাপা পদ্ধতি ও গ্রন্থ নিয়ে চর্চা করেন।
সাধারণত দুই ধরনের পেশা থেকে আসা গবেষকরা গ্রন্থ ইতিহাস নিয়ে লেখায় আগ্রহ দেখিয়েছেন। বর্তমানের বিখ্যাত গ্রন্থ-ইতিহাসবিদ জেমস রেভন (James Raven) যেমন অক্সফোর্ডে অধ্যাপনার সাথে যুক্ত আছেন। ফ্রান্সের বইয়ের ইতিহাস নিয়ে ম্যালকম ওয়ালসবি, ডেবিড হপকিন্স-ইত্যাদিরাও তাই। এদের ইতিহাস লেখায় গতানুগতিক ধারাবাহিকতা দেখা যায় (আরও সহজ করে বললে, আমরা সাধারণত যেভাবে ইতিহাসকে লিখি, সেই ধরণকে বলে M. L. A. স্টাইল {নেতাগিরি নয় কিন্তু}। প্রবন্ধের আকারে বিষয় লেখা আর টীকা ও তথ্যসূত্রের মাধ্যমে নিজেদের যুক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করাকে সহজ কথায় Modern Language Association স্টাইল বলে)। কিন্তু ভিন্ন বৌদ্ধিক চর্চার গবেষকরা অন্তত গ্রন্থবিদ্যার চর্চার নির্মাণের নতুন নতুন শৈলী আনছেন, সারা ওয়ার্নার তাদের মধ্যে অন্যতম, তাই তার লেখা এই প্রবন্ধের মূল আলোচ্য।
সারা ওয়ার্নারের কাজ নিয়ে বলার আগে আবারও আমাদের দুটো জিনিস খেয়াল রাখা দরকার। তার প্রথমটি হল, বর্তমান বই গবেষণার ধরণটি কেমন? ধরুন, আপনি কোন রাজার সম্বন্ধে জানতে চান, সেই সময়ের লিপি, মুদ্রা ইত্যাদি থেকে প্রাথমিক তথ্য নিতে পারেন। আগের ঐতিহাসিক কি লিখেছেন তাও দেখে নিতে পারেন। কিন্তু যখন বইয়ের ইতিহাস লিখবেন, তখন আপনার প্রাথমিক উপাদান সেই বইগুলিই। অর্থাৎ বইয়ের কাগজে, ছাপায়, মলাটে, মালিকেই তার অতীতকথা জড়িয়ে আছে। তাই সেসব বিশেষভাবে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ খুব জরুরি। সেই কারণে জড রেমন্ড-রা যখন ৬ খণ্ডের The Oxford History of Popular Print Culture নিয়ে অনেক বিস্তারিত কাজ শুরু করেন বা crossing borders, crossing cultures: popular print in Europe (1450–1900) শিরোনামে যখন কাজ শুরু হয়, তখন জেরয়েন সলমন-রা ধারাবাহিকভাবে ওয়ার্কশপ করেছিলেন। তাদের মিলিত পর্যবেক্ষণগুলি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় (crossing borders, crossing cultures-এর ওয়ার্কশপ হয় ২০১৭ সালের ১৫ ও ১৬ জুন এবং গ্রন্থ প্রকাশিত পায় ২০১৯ সালে)। সারা ওয়ার্নার তার Studying Early Printed Books, 1450-1800: A Practical Guide লেখার প্রস্তুতি হিসেবে বেশ কয়েকটি এমন কর্মশালা সম্পাদন করেন, যার প্রভাব তার লেখার মধ্যে দেখা যায় এবং তা অধিকাংশ ইতিহাসবিদদের মত M. L. A. স্টাইলে নয়।
দ্বিতীয়ত, ইতিহাস বলার মধ্যে দিন দিন বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে চলেছে। যেমন এর আগে ক্লাসরুম লেকচারারদের দৃষ্টিভঙ্গির উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। আবার যারা গ্রন্থাগারিক হিসেবে কোডিকোলজির চর্চা করেন, তারা ভিন্নতর নির্মাণের দিকে ঝোঁকেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মার্টিন লেওনস, অস্ট্রেলিয়ায় অধ্যাপনার কাজে যোগদান করার আগে তিনি বেশ কিছু বছর গ্রন্থ গবেষণার কাজে ছিলেন এবং তার লেখা Books: A Living History গ্রন্থটি গদবাধা ছক থেকে আমাদের ভিন্ন অনুভূতি দেয়। স্টিভ রউন্ড-ও শেষ দশ বছরে অন্তত দুটো গ্রন্থের মাধ্যমে দরিদ্র-সাধারণের সাহিত্যের নবনির্মাণের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সারা ওয়ার্নারের কাজেও আমরা এমনই ভিন্ন স্বাদ পাই। গ্রন্থের শিরনামেই তিনি জানিয়েছেন, এটি একটি ‘গাইড বুক’। এতদিনের ছকে বাঁধা ইতিহাস বই এটি নয়। আপনি যদি হঠাৎ করে ৫০০ বছর পিছিয়ে যান এবং একটি ছাপাখানায় প্রবেশ করেন তাহলে ঢাউস এক যন্ত্র দেখে আপনার মনে যা যা প্রশ্ন আসবে সারা তার গ্রন্থে ঠিক তাই তাই উত্তর হিসেবে লিখেছেন। তিনি চারদিকের খুঁটিনাটি নিয়ে নিজেই প্রশ্ন করেছেন ও নিজেই তার উত্তর অনুসন্ধান করেছেন।
প্রথম অধ্যায়ে সারা যে মুদ্রণযন্ত্রটি দিয়ে ছাপার ব্যাখ্যা করেছেন তা ব্যবহার হত সপ্তদশ শতকের মধ্যভাগ থেকে ঊনবিংশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত সময়ে। গুটেনবার্গ ছাপাযন্ত্রের ধারণা গ্রহণ করেছিলেন আঙুর রস করার যন্ত্রের থেকে। তাই আজ গুটেনবার্গ যন্ত্র নামে যা যা নবনির্মাণ করা হয়েছে তা ঐ যন্ত্রের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন। আমাদের মনে রাখতে হবে বই প্রকাশের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে কাগজের ব্যবহার শুরু হলে স্বাভাবিকভাবেই প্রেসস্টোনের আকৃতিতে কিছু পরিবর্তন আসে, যার ফলে ছাপাযন্ত্র দেখতে খানিকটা পালটে যায়।
দ্বিতীয় অধ্যায়টি সবচেয়ে বড় ও বেশী আগ্রহের। এখানে তিনি কাগজ তৈরি হওয়া থেকে বই বিক্রি পর্যন্ত প্রতিটি পদক্ষেপ অতীতে কিভাবে হত, তার বর্ণনা দিয়েছেন। অক্ষরের বিবর্তন, উডকাট থেকে লিথোগ্রাফ ইত্যাদি এমনকি বাঁধাইয়ের প্রতিটি অতীত ধারা নিয়ে আলোচনা করেছেন। সমগ্র বইটি তিনি এমনভাবে আলাদা কিছু টুকরো টুকরো কথা দিয়ে সাজিয়েছেন যে পড়তে পড়তে আপনার ঠিক যে প্রশ্নটা মাথায় আসবে, পাশেই আলাদা করে তার উত্তর পাওয়া যাবে।
তৃতীয় অধ্যায় পুরোটাই ছাপা নিয়ে। ধরুন আপনি একটি কাগজ ছাপিয়ে তাকে দুই ভাজ করে বাঁধালেন, তো সেই ভাজকে বলবো ফোলিও। ফোলিওকে আবার একটা ভাজ দেওয়া হল তো সে হবে কোয়ার্তো, তাকে আবার এক ভাজ দিলে হবে অক্টাভো। ফোলিও বইয়ে লেখার শুরু ও শেষ থেকে কম্পোজ শুরু হত। তাই মাঝের পাতার জায়গা পূরণ করতে ছবি দেওয়ার রীতি ছিল। কোয়ার্তো বা অক্টাভোর ক্ষেত্রে শেষে টেলপিস দেওয়া হত।
চতুর্থ অধ্যায়ের বিষয়বস্তু বইয়ের কেমিক্যাল ও ফরেন্সিক সাইন্স বিষয়ে। সম্ভবত আগের কোন লেখক এই অংশটি কখনো কোডিকোলজির গ্রন্থে যুক্ত করেননি। খুব সহজ দুই একটা বলি। কোন ছাপা বইয়ের একটি পৃষ্ঠা আপনার কাছে এনে যদি দাবি করা হয় এটা ৫০০ বছরের পুরানো, কাগজটাকে আলোর সামনে ধরুন। দেখুন, অসংখ্য দাগ দেখতে পারছেন কিনা, তাহলে বোঝা যাবে এটা Lade Paper। আর যদি দেখেন দাগগুলো সব সমান্তরাল তাহলে তা Wove paper হবে। কিন্তু আলোর উৎস যদি এপার থেকে দেখা না যায় তাহলে জানবেন ডাহা নকল জিনিস আপনার হাতে।
এখানেই গ্রন্থটি অনন্য। অতীত নিয়ে লেখার দুটো লক্ষ্য থাকে। প্রথমত সেই বিষয়কে সমৃদ্ধ করা, দ্বিতীয়ত তাকে সহজ করে পরিবেশন করা, যাতে তা আগ্রহী পাঠকের আকর্ষণের কারণ হতে পারে। সারা দ্বিতীয় পথ গ্রহণ করেছেন এই বইটির ক্ষেত্রে। আশাকরি ভবিষ্যতে এই প্রায়োগিক পাঠের ভেতরে ও বাইরে তিনি আমাদের আরও সমৃদ্ধ করবেন।
ইউরোপে বেশ কিছু সময় থেকেই ইতিহাসের শব্দগত নির্মাণ নিয়ে নানান ধরণের পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। বইয়ের ইতিহাসকেও ভিন্নভাবে দেখার চেষ্টা চলছে নিরন্তর। সারা ওয়ার্নার এই কাজে একজন গ্রন্থাগারিক হিসেবে গবেষণা করে যাচ্ছেন ও খুব সম্প্রতি বিবলিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটি অফ আমেরিকার সম্পাদক হিসেবে সম্মানিত হয়েছেন। বই তার আকৃতি, আকার ও বৈশিষ্ট্যের বৈচিত্র্য নিয়ে আরও অনেকদিন সারা ওয়ার্নারদের গবেষণার বিষয়বস্তু হিসেবে টিকে থাকুক, সভ্যতার কাছে আমাদের প্রজন্মের এই আকুতি নিশ্চিত থাকবে।
তথ্যসূত্র:
Sarah Werner, Studying Early Printed Books, 1450-1800: A Practical Guide, Wiley Blockwell, 2019
অতীতের নকল বই নিয়ে তার আলোচনা শুনতে পারেন-
লেখাটি সুন্দর তথ্যসমৃদ্ধ হলেও ইউরোপীয় রেনেসাঁস এর সময়ের যে ছাপাখানার আবিষ্কারক জার্মানিতে জোহানেস গুটেনবার্গ প্রথম ১৪৫৫ সাকে বই ছাপার অক্ষরে লিপিবদ্ধ করেন সেই অংশটি যোগকরা দরকার ছিলো।
অনেক ধন্যবাদ। হয়তো গুটেনবার্গ ও অন্যদের উল্লেখ এখানে প্রয়োজন ছিল। তবে এই পোর্টালে এর আগের একটি লেখায় (অক্ষরের ইতিহাস নিয়ে) গুটেনবার্গের সময়ের সামান্য আলোচনা ছিল। সেই উল্লেখের কারণে এখানে আর দ্বিতীয়বার উল্লেখ করা হয়নি। তবুও আপনি বললেন যখন, মাথায় রইল।