নিয়েণ্ডারথাল মানব ও কোভিড-১৯
আজ থেকে পঁয়ত্রিশ হাজার বছর আগে নিয়েণ্ডারথাল মানব ‘নিশ্চিহ্ন’ হয়ে গেছে।
সত্যি কি ওরা ‘নিশ্চিহ্ন’ হয়ে গেছে?
নিয়েণ্ডারথাল মানবের জিনের একটা টুকরো এখনও রয়ে গেছে আমাদের জিনে, মানুষের জিনোমে। অর্ধেক ভারতীয়দের জিনোমে নাকি এই বিশেষ ডিএনএ-খণ্ড তথা জিনটি রয়ে গেছে। এটি আছে আমাদের ১২ নম্বর ক্রোমোজোমের মধ্যে। এতদিন পরে তার খোঁজ পড়ল।
কোভিড-১৯ অতিমারীর অতি-সাম্প্রতিক গবেষণা জানিয়ে দিচ্ছে, ইউরোপে ঠাণ্ডায় বসবাস করত নিয়েণ্ডারথালরা। ঠাণ্ডায় যেসব ফ্লু-জাতীয় ভাইরাসের উপদ্রব হয়, ওরা তাদের সংস্পর্শে এসেছিল। আমারা অর্থাৎ মানুষ (হোমো সেপিয়েন্স) এইসব ভাইরাসের মোলাকাত তুলনায় কম করেছি। কোভিড-১৯ হল প্রাচীন ইউরোপের সেই ফ্লু-জাতীয় ভাইরাসের এক জ্ঞাতি। আমাদের মধ্যে টিকে থাকা এই ডিএনএ খণ্ড সম্ভবত সেই সময়কার ভাইরাসের সঙ্গে নিয়েণ্ডারথাল মানুষের লড়াই করার ফলে ইমিউন ব্যবস্থার দীর্ঘ বিবর্তনীয় সংগ্রামের সাক্ষ্য দিচ্ছে। আনুমানিক ৫০ শতাংশ ভারতীয় জনগণ গুরুতর কোভিড-১৯ এর প্রতি কম সংবেদনশীল নিয়েণ্ডারথাল উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত এই ডিএনএ-খণ্ডের জন্য।
জাপানের ‘ওকিনাওয়া ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি গ্র্যাজুয়েট ইউনিভার্সিটি’ এবং জার্মানির বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানের জন্য ‘ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট’, এই দুটি খ্যাতনামা পরীক্ষাগারের বিজ্ঞানীরা এ কথা জানিয়েছেন।
তবে নিয়েণ্ডারথাল উত্তরাধিকার একেবারে অবিমিশ্র সুখের কথা নয়। গত বছরের জুলাই মাসে এই ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটের গবেষকদের এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, আমাদের তিন নম্বর ক্রোমোজোমের একটি অংশ নিয়েণ্ডারথাল উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত। সেই জিন আবার কোভিড-১৯ এর থেকে মারাত্মক অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়ায়। আর দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে আনুমানিক ৩০ শতাংশ মানুষ এই জিন বহন করেন। অর্থাৎ ভারতীয়দের মধ্যেও এই জিন যথেষ্ট বেশি।
বিশ্বের অন্য সমস্ত মানুষের মতই সুদূর অতীতের চিহ্ন বহন করে আমরা এক মিশ্র জাতি। যতই আমারা ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় হিন্দু মুসলমান করে নিজেদের ভাগ করে নেই না কেন, আমাদের বাঁচা-মরা লিখিত আছে একই সাধারণ ডিএনএ লিপিতে। সেই লিপি নিজেদের মধ্যে গণ্ডী তোলার প্রচেষ্টার তোয়াক্কা করে না। জিনের সেই লিখন রোগ এবং মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে সুদূর অতীতের সূত্রে আমাদের একত্র করছে। শুধু সেই লিপি পড়ার চোখ সবার খুলবার অপেক্ষা।
পুরো খবর পড়ার জন্য নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন।
— ডা. জয়ন্ত দাস।
আপনার লেখা থেকে বিষয়টি জানতে পেরে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম যে গান্ধী, নেহরু, রবি ঠাকুর, নেতাজির ভারতবর্ষে চাড্ডির ফলন এত বেড়ে গেল কেন? আজ এই লেখাটিতে উত্তর পাওয়া গেল। গেরুয়ার প্রকোপ, করোনার প্রকোপ থেকে ও বেশি ক্ষতিকর।
ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য l কিন্তু আরও আলোচনার দাবি রাখে l
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ।এটি আরও অনেক আলোচনার দাবি রাখে ।তবে এই আলোচনাকে খাটো করে দেখার কোন অবকাশ নাই। লেখাটি অত্যন্ত আমাদের মত কম শিক্ষিত লোকের জন্য কম নয় ।অনেক ধন্যবাদ ।
আমরা সকলেই তো শিখছি। চেষ্টা করবো এ বিষয়ে আরও লিখতে।
Does Neandarthals and homo sapiens lived at the same time?
Why Europeans became decendants of Neandarthals. What about others. Please provide little details
৭০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার বছর আগে পর্যন্ত এই দুই জ্ঞাতি কাছাকাছি থেকেছে। মিশ্রিত হয়েছে।
ইউরোপীয়রা নিয়েণ্ডারথালদের উত্তর পুরুষ একথা সত্য নয়। সকল মানুষ হলো হোমো সেপিয়েন্স। আর সকল মানুষের মধ্যে সামান্য পরিমাণে নিয়েণ্ডারথাল জিন আছে।
ইউরোপীয়, এশিয় সকলের মধ্যে।
৭০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার বছর আগে পর্যন্ত এই দুই জ্ঞাতি কাছাকাছি থেকেছে। মিশ্রিত হয়েছে।
ইউরোপীয়রা নিয়েণ্ডারথালদের উত্তর পুরুষ একথা সত্য নয়। সকল মানুষ হলো হোমো সেপিয়েন্স। আর সকল মানুষের মধ্যে সামান্য পরিমাণে নিয়েণ্ডারথাল জিন আছে।
ইউরোপীয়, এশিয় সকলের মধ্যে।