গণিতবিদ নিয়েণ্ডারথাল
অংকে আমার ভীষণ ভয়। তাও বাবা, মা, স্কুল শিক্ষক আর গৃহ শিক্ষকের যৌথ প্রচেষ্টায় যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ করতে একটু হলেও শিখেছি। আর এই শেখার পিছনে একটা অনুপ্রেরণা আর একটা ভয় কাজ করেছিল। অনুপ্রেরণা ছিলেন আর্যভট্ট। যিনি শূন্য আবিষ্কার করেছিলেন, তাঁর দেশের লোক হয়ে অংক শিখবো না, তা কি হয়? তাই যতটা নিজের জন্য ততটাই আর্যভট্টের মান রক্ষার জন্য কিছুটা হলেও অংক শিখে নিয়েছি। আর ভয়ের ব্যাপারটা? অংক না শিখলে নাকি জীবনযুদ্ধে হেরে যেতে হয়! এমনকি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে – যা হয়েছিল নিয়েণ্ডারথালদের সাথে।
আমরা তো ‘হোমো সাপিয়েন্স’। তা একসময় নাকি আমাদের বেশ কয়েকজন জ্ঞাতি ভাই ছিল এই পৃথিবীতে। তাঁদের কেউ আর আজ টিকে নেই। শুধু আমাদের জিনোমে তাঁদের একটু-আধটু জিন রয়ে গিয়েছে। এই জ্ঞাতি ভাইদের মধ্যে সবচেয়ে কাছের জ্ঞাতি ছিল নিয়েণ্ডারথালরা। তাঁরাও প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে আমাদের পূর্বপুরুষদের সাথে যুঝে উঠতে না পেরে। এই যুঝে উঠতে না পারার অনেকগুলো কারণের একটা কারণ নাকি ছিল যে আমাদের পূর্বপুরুষরা গণনা করতে পারতো কিন্তু নিয়েণ্ডারথালরা গণনা করতে পারতো না। মানে অঙ্কে দুর্বল আমারও ‘ফুচুরডুম’।
আজ সকালে একটা খবর পড়ে অংকে দুর্বলতাজনিত হীনমন্যতা অনেকটা কাটিয়ে উঠলাম। খবর পড়ে জানলাম যে গণনা করতে না পারাটা নাকি নিয়েণ্ডারথালদের বিলুপ্ত হওয়ার কারণ নয়। কারণ নিয়েণ্ডারথালরা গণনা করতে জানতো। এইরকমই দাবি করছেন ফ্রান্সের বোর্দো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ববিদ ফ্রান্সেস্কো ডি’এরিকো।
১৯৭০ সালে ফ্রান্সের ‘লে পারদেলে’তে পাওয়া গিয়েছিল ৬০ হাজার বছরের পুরনো হায়নার হাড়। তাতে পাশাপাশি ৯’টা দাগ কাটা আছে। মিস্টার ডি’এরিকো দাবি করছেন যে জনৈক নিয়েণ্ডারথাল নাকি পাথর দিয়ে এই হাড়ের ওপর এই দাগগুলো কেটেছিল গণনা করার জন্য। চমকে যাবার মত খবর!
কি করে মিস্টার ডি’এরিকো পৌঁছলেন তাঁর এই সিদ্ধান্তে, জীবজগতে আর কাদের অঙ্কে ন্যাক আছে – এইরকম আরও অনেক তথ্য আছে এই খবরে। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি তা বুঝে, গুছিয়ে লেখার মত ক্ষমতা আমার নেই। তাই নিচে দিয়ে দিলাম খবরের লিংক। আপনার যদি ইচ্ছে হয় ………..
– শান্তনু ভৌমিক
আচ্ছা, নিয়েণ্ডারথালদের সময়ে সেপিয়েন্স-রা কি অঙ্কে ভাল ছিল? পরীক্ষা নিলে কে ফার্স্ট হবে, জানা গেছে?