হারিয়ে যাওয়া শহর ‘এটেন’-এ ব্লকবাস্টার ডিসকভারি
পৃথিবীর প্রাচীন ইতিহাসের যে চরিত্রগুলি আজকের দিনে সর্বজনবিদিত, তাঁদের মধ্যে একজন হলেন তুতানখামুন।
তুতানখামুন ছিলেন প্রাচীন মিশরের এক ফারাও। সিংহাসনে বসার আগে তাঁর নাম ছিল তুতেনখামেন। সিংহাসনে বসে তিনি প্রাচীন মিশরীয় দেবতা ‘আমুন’এর নামানুকরণে নিজের নাম পরিবর্তন করে রাখেন তুতানখামুন। তবে এই নাম পরিবর্তন কোন কাজে আসেনি। মাত্র ১০ বছর রাজত্ব করার আনুমানিক ১৩২৪ সাধারণ পূর্বাব্দে মারা যান তুতানখামুন। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৯।
মাত্র ১০ বছর শাসন করে কেউ ইতিহাসে নাম তুলতে পারেন না। তুতানখামুন’ও পারেননি। যারা মিশরের ইতিহাস নিয়ে খুব নাড়াচড়া করতেন, শুধু তাঁরাই জানতেন ‘রাজা তুত’এর নাম।
তুতানখামুন বিশ্ববিখ্যাত হয়ে ওঠেন মারা যাওয়ার অনেক পরে – আজ থেকে মাত্র ১০০ বছর আগে যখন ১৯২২ সালে ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ হাওয়ার্ড কার্টার এবং লর্ড কার্নারভন আবিষ্কার করেন তাঁর সমাধি। সারা পৃথিবী পরিচিত হয়ে ওঠে তুতানখামুন’এর নামের সাথে। তুতানখামুন’এর এই বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পাওয়ার কারণ – তাঁর সমাধি হচ্ছে মিশরের ফারাও’দের একমাত্র সমাধি যা মোটের ওপর অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। চার কক্ষ বিশিষ্ট এই সমাধি থেকে পাওয়া গিয়েছে তুতেনখামুন’এর অবিকৃত মমি যা ৩ হাজার বছরেরও বেশি পুরনো এবং ৫ হাজারেরও বেশই ‘আর্টিফ্যাক্টস’। তুতেনখামুন’এর সমাধি দেখা’র পর’ই ঐতিহাসিকরা বুঝতে পারেন যে ফারাও’দের সমাধি দেখতে ঠিক কেমন হত। তুতেনখামুন’এর সমাধি থেকে পাওয়া জিনিসপত্র থেকে ঐতিহাসিকরা জানতে পারেন ফারাও’দের আড়ম্বরপূর্ণ এবং বৈভবময় জীবন এবং তৎকালীন মিশর সম্পর্কে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। এই কারণে তুতানখামুন’এর সমাধি আবিষ্কার’কে গণ্য করা হয় প্রাচীন মিশর সম্পর্কিত সবচেয়ে গুরুত্বপর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার বলে।
প্রাচীন মিশর সম্পর্কিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ন প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার গুলি হল রোসেটা স্টোন’এর আবিষ্কার (১৭৯৯ সালে), গিজা’র পিরামিড’এর আবিষ্কার (১৮৮০ সালে) ইত্যাদি।
সম্প্রতি মিশরে এমন একটি আবিষ্কার হয়েছে যা অনেক ঐতিহাসিকের মতে প্রাচীন মিশর সম্পর্কিত আবিষ্কারগুলির গুরুত্বের ক্রমতালিকায় ২ নম্বর স্থানে থাকবে – তুতানখামুন’এর সমাধি আবিষ্কারের ঠিক পরেই। বিখ্যাত মিশরবিদ জাহি হাওয়াস’এর নেতৃত্বে একদল প্রত্নতত্ত্ববিদ লুক্সর’এর কাছে খুঁজে পেয়েছেন এক হারিয়ে যাওয়া ‘গোল্ডেন সিটি’কে যা তাঁদের মতে ছিল প্রাচীন মিশরের সবচেয়ে বড় শহর ‘এটেন’। ঐতিহাসিকরা মনে করছেন যে এই প্রাপ্তি তুলে আনবে প্রাচীন মিশরীয়দের জীবন যাপন সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য।
নতুন করে খুঁজে পাওয়া প্রাচীন মিশরের এই হারিয়ে যাওয়া শহর ‘এটেন’ সম্পর্কে আরও জানতে চান? তাহলে, আপনাকে পড়তে হবে’এ নিচের লিংক’এ দেওয়া প্রতিবেদন’টি।
– শান্তনু ভৌমিক।
মূল্যবান দৃষ্টি আকর্ষণী সংগ্রহ।