জেন (অস্টেন) যান (বাহন) যাতায়াত (ব্যবস্থা)
জেন অস্টেন তাঁর নভেলগুলির খসড়া লেখার কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন ১৭৯৫ সালে, যখন তাঁর বয়স মাত্র একুশ। জেনের তিনটি উপন্যাস – ‘সেন্স অ্যান্ড সেন্সিবিলিটি’, ‘প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস’ ও ‘নর্দাঙ্গার অ্যাবে’-র প্রথম খসড়া ১৭৯৫ থেকে ১৮০০ সালের মধ্যেই লেখা হয়ে গিয়েছিল। নভেলগুলি ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হতে শুরু করল অবশ্য ১৮১১ সাল থেকে। মাঝের সময়টায় আগের খসড়াকে তিনি নানাভাবে বদলেছেন, সমৃদ্ধ ও পরিণত করেছেন। ১৮১৩ থেকে ১৮১৬ সালের মধ্যে ‘ম্যানসফিল্ড পার্ক’, ‘এমা’ ও ‘পারসুয়েশান’ নামে তিনটি নতুন উপন্যাসও তিনি লেখেন। নিবিড় পাঠক শুধু এই উপন্যাসগুলির ভিত্তিতেই সে সময়কার ইংল্যান্ড বিষয়ে বেশ কিছু খবর আমাদের জানাতে পারবেন। আপাতত আমাদের দেখার বিষয় সমকালীন ইংল্যান্ডের যানবাহন ও যাতায়াত সম্পর্কে জেন অস্টেনের উপন্যাস আমাদের কী জানায়। সেই তথ্যের সঙ্গে সেকালের এই বিষয়ক সামাজিক সাংস্কৃতিক ইতিহাসের কিছু তথ্য মেলালে আমরা দূর দেশকালে বসেও সেই সময়টাকে খানিকটা উপলব্ধি করতে সক্ষম হব।
জেনের সময় ইংল্যান্ডে তিন ধরনের যানবাহন চলত। ১) রোড ওয়াগন ২) মেল কোচ ও ৩) স্টেজ কোচ। রোড ওয়াগন ব্যবহৃত হত খুব ভারি জিনিসপত্র বহনের কাজে। আটটি ঘোড়া দিয়ে দশ চাকার এই বিরাট গাড়িগুলি টানা হত। গতি ছিল মন্থর, ঘন্টায় বড়জোর তিন মাইল। খুব গরিব কিছু মানুষ এতে করে যাতায়াতও করতেন, কারণ স্টেজ কোচে যাতায়াতের ব্যয় বহন করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব ছিল না।
মেল কোচ ছিল সরকারি ডাক পরিবহন ব্যবস্থা। এতে একজন চালক বা কোচোয়ান থাকত। তার পেছনে বসতেন এক বন্দুকধারী প্রহরী। ঘন্টায় প্রায় সাত/ আট মাইল বেগে এই গাড়িগুলি যাতায়াত করত। মেল কোচ বহনের জন্য ব্যবহৃত হত চারটি ঘোড়া। লন্ডন থেকে বাথ শহরের দূরত্ব ১১৬ মাইল। ১৭৮৪ সালের একটি হিসাব থেকে জানা যায় মেল কোচ এই দূরত্ব তেরো ঘন্টায় পাড়ি দিচ্ছে। মেল কোচ মূলত ডাক পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হলেও এক একটি গাড়িতে সর্বোচ্চ চারজন করে যাত্রী পরিবহনেরও ব্যবস্থা ছিল। তবে যাত্রীরা সঙ্গে ভারি মালপত্র নিতে পারতেন না।
গণ পরিবহন
সাধারণ মানুষের যাতায়াতের মূল অবলম্বন ছিল স্টেজ কোচ। বিভিন্ন ব্যবসায়িক কোম্পানি নাগরিকদের এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় নিয়ে যাবার জন্য স্টেজ কোচ চালাত। এতে চার বা ছ’টি ঘোড়া ব্যবহৃত হত। ঘোড়ারা এক খেপে সাত থেকে দশ মাইল যেতে পারত। তাই স্টেজ কোচের ঘোড়াগুলি নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর বদলাতে হত। ঘোড়ারা দিনে দু’ খেপ যেতে আসতে পারত। এক খেপ-এ নির্দিষ্ট আস্তাবল থেকে তারা রওনা দিত। পথিমধ্যে তাদের গাড়ি থেকে খুলে অন্য ঘোড়া গাড়িতে লাগানো হত। আগের ঘোড়াগুলি বিশ্রাম নিয়ে পরের কোনও গাড়ির সঙ্গে জুড়ে গিয়ে ফিরতি পথ ধরে আস্তাবলে ফিরে আসত। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে ঘোড়াদের পূর্ণ বিশ্রামের ব্যবস্থা ছিল। তবে অধিক মুনাফার দিকে তাকিয়ে অনেক কোম্পানি ঘোড়াদের উপযুক্ত খোরাকি বা বিশ্রাম দিত না। স্টেজ কোচ সাধারণভাবে ঘন্টায় সাত মাইল যেতে পারত। তবে ১৮১৬ সালে লন্ডনের এক স্টেজ কোচ কোম্পানি বলেছিল একটানা চালিয়ে তারা লন্ডন থেকে ব্রাইটন এই বাহান্ন মাইল রাস্তা ছয় ঘন্টার মধ্যে পৌঁছে দেবে। ঘোড়াদের ওপর মাত্রাতিরিক্ত চাপ দিতে গিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের পনেরোটি ঘোড়া মারা যাওয়ায় তাদের প্রকল্পটি বন্ধ করে দিতে হয়।
স্টেজ কোচের ভেতরে ছ’জনের বসার জায়গা হত। পেছনে রাখা এক বড়ো বাক্সে যাত্রীদের মালপত্র ঢুকিয়ে দেওয়া হত। গাড়ির ছাদে বেশ কিছু মানুষ চড়ত। কতজন ছাদে উঠতে পারবে তার কোনও নিয়ম ছিল না। বেশি মানুষ ছাদে উঠে পড়ায় প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটত। অনেক মাতাল ছাদ থেকে গড়িয়ে পড়ে আহত হত। আবার প্রবল শীতে ঠান্ডায় জমে ছাদের আরোহীর মৃত্যুর সংবাদও পাওয়া যেত।
স্টেজ কোচ
পোস্ট চেইজ নামে স্টেজ কোচের এক বিকল্প ব্যবস্থা ছিল। তিন চারজন যাত্রী এক পথে গেলে সরাইখানার সঙ্গে যোগাযোগের ভিত্তিতে সরাইখানার তরফেই পোস্ট চেইজ এর ব্যবস্থা করে দেওয়া হত। সরাইখানাগুলিই ছিল পোস্ট চেইজ এর মালিক।
পোস্ট চেইজ
পারিবারিক গাড়ি
কোচ
পারিবারিক যানবাহন বা ক্যারেজের মধ্যে কোচ ছিল সবচেয়ে পুরানো, সবচেয়ে মজবুত ও ভারি, সবচেয়ে দামী। কোচের ভেতরে ছয়জন বসতে পারত। জেন অস্টেনের অনেক উপন্যাসেই চরিত্র পাত্রদের আমরা কোচ গাড়িতে যাতায়াত করতে দেখি। প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস-এর বেনেট পরিবার, ম্যান্সফিল্ড পার্ক-এর বার্টাম পরিবার, পারসুয়েশান-এর মুসগ্রোভ পরিবার – সকলেই কোচ ব্যবহার করেছে।
কোচ
রাস্তাঘাটের উন্নতির পর অপেক্ষাকৃত হালকা গাড়ি ব্যবহার করা সম্ভব হয়। চেইজ ও চ্যারিয়ট ছিল কোচের চেয়ে হালকা ধরনের পারিবারিক গাড়ি। চেইজ জাতীয় গাড়িতে তিনজন বসতে পারত, তার মধ্যে একজন গাড়িটা চালাত।
চেইজ
নর্দাঙ্গার অ্যাবে উপন্যাসের জেনারেল টিনলে ব্যবহার করতেন চার ঘোড়ায় টানা একটি ফ্যাশেনেবল চেইজ। অস্টেনের উপন্যাস সমূহে অন্যান্য চেইজ ব্যবহারকারীদের মধ্যে আছে সেন্স অ্যান্ড সেন্সিবিলিটির কর্নেল ব্রান্ডন, প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস-এর মিস্টার বিংলে ও মিস্টার হার্ট, ম্যান্সফিল্ড পার্ক-এর বার্টাম পরিবার ও মিস্টার রাসওয়ার্থ, এমার সাকলিনস পরিবার, পারসুয়েশান-এর এলিয়ট পরিবার।
চেইজ
চ্যারিয়ট
চ্যারিয়ট ছিল চেইজের মতোই আর একটি পারিবারিক গাড়ি। তবে চেইজের সামনে আরও একটি অতিরিক্ত অংশ থাকত যেখানে আলাদা করে একজন চালক বসতেন। ‘সেন্স অ্যান্ড সেন্সিবিলিটি’ উপন্যাসের জন ড্যাশউডের এরকম একটি চ্যারিয়ট ছিল। ম্যানসফিল্ড পার্ক-এর মিসেস রাওয়ার্থও এরকম একটি চ্যারিয়টে চাপতেন।
চ্যারিয়ট
কোচ, চেইজ আর চ্যারিয়ট ছিল পরিবারের অনেকের একসঙ্গে যাতায়াতের গাড়ি। দু একজনের যাবার জন্য যে সব ধরনের গাড়ি ছিল তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ফিটন, কারিকল ও গিগ।
ফিটন ও পনি ফিটন
একা বা এক সঙ্গী নিয়ে চলাচলের জন্য তরুণদের মধ্যে খুব জনপ্রিয় গাড়ি ছিল ফিটন। চার চাকার এই গাড়িটি টানত দুটি বা তার বেশি ঘোড়া। একটু ঝুঁকিপূর্ণ এই গাড়িটি বেশ খানিকটা উঁচু ছিল বলে একে হাইফ্লায়ার বলা হত।
ফিটন
অনেকে, বিশেষত তরুণীরা এর অন্য একটি কম উঁচু ঘোড়ার, কম ঝুঁকিপূর্ণ সংস্করণ বেশি ব্যবহার করতেন, যার নাম ছিল পনি-ফিটন বা লো ফিটন।
লো ফিটন
কারিকল ছিল এক বা দু’জনের যাতায়াতের আর একটি জনপ্রিয় গাড়ি। সেন্স অ্যান্ড সেন্সিবিলিটির জন উইলোবি, প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস-এর মিস্টার ডার্সি ও উইলিয়াম গোল্ডিং, ম্যানসফিল্ড পার্ক-এর মিস্টার রাসওয়ার্থ, নর্দাঙ্গার অ্যাবের হেনরী টিনলে, পারসুয়েশান-এর চার্লস মুসগ্রোভ ও উইলিয়াম এলিয়টকে আমরা কারিকল ব্যবহার করতে দেখি।
কারিকল
গিগ
ফিটন ও কারিকল ছিল একটু দামী গাড়ি। এক ঘোড়ায় টানা দু চাকার গিগ ছিল তুলনামূলক সস্তা দরের। সেন্স অ্যান্ড সেন্সিবিলিটির নবীন আইনজীবীদের, প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস-এর মিস্টার কলিন্সকে, নর্দাঙ্গার অ্যাবে-র জেমস মোরল্যান্ড ও জন থর্পেকে এবং পারসুয়েশন-এর ক্রফটদের আমরা গিগ ব্যবহার করতে দেখি।
গিগ
উনিশ শতকের একেবারে গোড়ায়, ১৮০০ সালে দু’টি ইউরোপীয় গাড়ি ইংল্যান্ডের বাজারে প্রবেশ করে। একটি হল জার্মান ল্যান্ডাউ (landau) ও তার ছোট সংস্করণ ল্যান্ডাউলেট (landaulette)। ল্যান্ডাউ ছিল কোচ-এর মতো বড়ো গাড়ি আর ল্যান্ডাউলেট ছিল চ্যারিয়টের মতো। ল্যান্ডাউ-এর চামড়ার হুড বা আচ্ছাদন মাঝখান থেকে দু’দিকে খোলা যেত। ল্যান্ডাউলেট-এর হুড বা আচ্ছাদনটি সামনের দিক থেকে পেছনের দিকে খুলত।
ল্যান্ডাউলেট
ইউরোপ থেকে আর যে গাড়িটি এই সময়ে ইংল্যান্ডের বাজারে আসে সেটি হল বারুচ। ম্যানসফিল্ড পার্ক উপন্যাসে হেনরি ক্রফোর্ড-এর বারুচ চালানোর একটি দৃশ্য বিখ্যাত হয়ে আছে। গাড়ির মূল অংশের ভেতরে বসেছিল আন্ট নরিস, ফ্যানি, ম্যারি ক্রফর্ট ও মারিয়া বার্টাম। পাশে জুলিয়াকে নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিল হেনরি আর এটা হেনরির প্রতি আকৃষ্ট জুলিয়ার দিদি মারিয়াকে হিংসায় জ্বালিয়ে দিচ্ছিল। পারসুয়েশন উপন্যাসে এক বর্ষার দিনে লেডি ড্যালরিম্পেল এলিজাবেথকে তাঁর বারুচে করে নিয়ে যেতে চান। কিন্তু গাড়িতে উঠেও তাঁরা ভিজে যান কারণ বারুচের একমাত্র আচ্ছাদনটি কেবল সামনের আরোহীকেই রোদ জল থেকে বাঁচাত।
বারুচ
১৮০৪ সালে বারুচ ও ল্যান্ডাউ এর এক মিলিত সংস্করণ – ল্যান্ডাউ বারুচ বাজারে আসে। এমা উপন্যাসে মিসেস এলটন অপেক্ষা করে থাকেন কবে এই গাড়িটি তার কাছে আসবে, তবে শেষ পর্যন্ত গাড়িটি তার কাছে এসে পৌঁছোয়নি।
ল্যান্ডাউ বারুচ
জেন অস্টেনের উপন্যাসে ঘোড়ায় টানা নানা ধরনের গাড়ির প্রসঙ্গ বারবার এসেছে আর এই সব উল্লেখের মধ্যে দিয়ে জেন সামাজিক বিন্যাস, রুচি ও প্যাশনের দিকে ইঙ্গিৎ করেছেন। একাধিক গাড়ি থাকাটা ছিল বেশ বড়লোকী ব্যাপার।
‘প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস’-এর একেবারে শুরুর দিকে আমরা দেখি মিসেস বেনেট স্বামীকে যখন মিস্টার বিংলের বিষয় সম্পত্তির সমৃদ্ধির কথা উৎসাহ নিয়ে জানাচ্ছেন, “you must know, Mrs. Long says that Netherfield is taken by a young man of large fortune from the north of England; that he came down on Monday in a chaise and four…”। এখানে চার ঘোড়ায় টানা চেইজ জাতীয় গাড়ি করে বিংলে পরিবারের নেদারফিল্ড নামের খামার বাড়িতে আসাটা তাদের সমৃদ্ধির দ্যোতক।
এমা উপন্যাসের আগুস্তা এলটনের ব্রাদার-ইন-ল মিস্টার সাকলিং এর একাধিক গাড়ি ছিল। আর এ থেকে বোঝা যাচ্ছিল খরচ করার মতো যথেষ্ট পয়সা তাঁর ছিল। একই কথা প্রযোজ্য আরও বিত্তবান এবং প্রতিপত্তিশালী লেডি ক্যাথারিন ডি বগ এর ক্ষেত্রে। এলিজাবেথ বেনেটের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি কত ধনী ঘরের মেয়ে তা বোঝাতে তাঁর বাবার কত রকমের গাড়ি ছিল সেটা তিনি সবিস্তারে জানান। এলিজাবেথকেও তিনি জিজ্ঞাসা করেন তার বাবার ক’টা কী গাড়ি আছে। উপন্যাস থেকে আমরা জানতে পারি লেডি ক্যাথরিনের নিজের অনেক গাড়ি ছিল। তাঁর মেয়ে চড়ত একটি নীচু ফিটন। তিনি নিজে লন্ডন যাবার জন্য বারুচ ব্যবহার করতেন।
জেন অস্টেনের উপন্যাসগুলির মধ্যে গাড়ি ও ঘোড়া সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি কথা এসেছে নর্দাঙ্গার অ্যাবেতে। ঘোড়া কতটা একটানা যেতে পারে, কত গতিতে গাড়ি চলে – সে সব হিসাব নিকাশ এখানে রয়েছে। এই উপন্যাসের তরুণ কলেজ ছাত্র জন থর্পের গাড়ি নিয়ে আবেগ ছিল বেশ চড়া ধরনের। সে ক্যাথরিন মোরল্যান্ডকে আকৃষ্ট করতে তার সেকেন্ড হ্যান্ড ‘গিগ’টি সম্পর্কে অনেক ভালো ভালো কথা বলে। বোঝাতে চায় এটি অনেকটা কারিকলের মতোই স্মার্ট। তার ঘোড়া একটানা কতটা দৌড়াতে পারে, সে কত দ্রুত গাড়ি চালায় – এসব অতিরঞ্জিত করে বলে এক তরুণীর মন পাওয়ার চেষ্টায় তার খামতি নেই।
সেন্স অ্যান্ড সেন্সিবিলিটি উপন্যাসে ফ্যানি ড্যাশউড ও তাঁর মা মিসেস ফেরার এর কথাবার্তা থেকে ধরা পড়েছে গাড়ির ধরন কেবল বিত্ত নয়, সামাজিক স্থানাঙ্কেরও নির্দেশক। তাঁরা চান এডওয়ার্ড ফেরার রাজনীতি ও আইন ব্যবসায় প্রতিপত্তি অর্জন করুক আর স্ট্যাটাস সিম্বল বারুচ চালিয়ে ঘুরে বেড়াক। কিন্তু এডওয়ার্ড অত উচ্চাশী নয়। সে খ্যাতিও চায় না, বারুচে করে ঘোড়ার শখও তার নেই। বারুচ অবশ্য অস্টেনের উপন্যাসের অনেক চরিত্রেরই ছিল। সেন্স অ্যান্ড সেন্সিবিলিটি-র ফ্যানি ড্যাশউড ও মিসেস পালমার বারুচের মালিক ছিলেন। প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস-এর লেডি ক্যাথরিন বারুচে চেপে লন্ডন যেতেন। ম্যানসফিল্ড পার্ক-এর হেনরি ক্রফোর্ড এবং পারসুয়েশান-এর লেডি ড্যালরিম্পেলকে আমরা বারুচ চালাতে দেখি।
পারসুয়েশান উপন্যাসের শুরুতেই আমরা জানতে পারি স্যর ওয়াল্টার এলিয়ট আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন। সম্পত্তি বিষয়ক পরামর্শ দিতে গিয়ে জোন্স স্যার এলিয়টকে জানান যে একাধিক গাড়ি রাখার খরচকে এখন অকারণ বিলাসিতা বলে ধরতে হবে ও তা বর্জন করতে হবে। কিন্তু তখনই গাড়ি বিক্রি না করে ওয়াল্টার এলিয়ট বিলাস বহুল গাড়ি সমেতই বাথে আসেন যাতে প্রতিবেশীদের কাছে তাঁর আর্থিক সঙ্কট ধরা না পড়ে। বোঝা যায় গাড়ি যেমন ছিল প্রয়োজন, তেমনি ছিল সামাজিক মর্যাদা, প্রতিপত্তি, আবেগ, উচ্চাকাঙ্ক্ষা – এ সবের সঙ্গেও জড়ানো।
সারণি
গাড়ির নাম | ঘোড়ার সংখ্যা | চাকার সংখ্যা | আরোহীর সংখ্যা |
স্টেজ কোচ | ৪/৬ | ৪ | ৬+ |
পোস্ট চেইজ | ২/৪ | ৪ | ৩ |
কোচ | ২ | ৪ | ৬ |
চেইজ | ২/৪ | ৪ | ৩ |
চ্যারিয়ট | ২ | ৪ | ৩ |
বারুচ | ২ | ৪ | ২ |
ল্যান্ডাউ | ২ | ৪ | ২ |
বারুচ ল্যান্ডাউ | ২ | ৪ | ৪ |
ফিটন | ২ | ৪ | ২ |
কারিকল | ২ | ৪ | ২ |
গিগ | ২ | ২ | ২ |
আকর
১. Janet Todd edited, ‘Jane Austen in Context’; Cambridge University Press, 2005.
২. Mary Waldron, ‘Jane Austen And The Fiction of Her Time’; Cambridge University Press, 1999.
৩. Deirdre Le Faye, ‘Jane Austen: The World of Her Novels’; Harry N. Abrams, 2002.
৪. Janet Todd edited, ‘The Cambridge Introduction to Jane Austen’; Cambridge University Press, 2006.
৫. Edward Copeland, Juliet McMaster edited, ‘The Cambridge Companion to Jane Austen’; 1997.
৬. Laura Lambdin, Robert Lambdin, ‘A Companion to Jane Austen Studies’; Greenwood, 2000.
৭. Claudia L. Johnson, Clara Tuite, ‘A Companion to Jane Austen’; Wiley-Blackwell, 2009.
৮. Richard Jenkyns, ‘A Fine Brush on Ivory: An Appreciation of Jane Austen’; Oxford University Press, 2004.
৯. Paul Poplawski, ‘A Jane Austen Encyclopedia’, Greenwood, 1998.
১০. Robert Irvine, ‘Jane Austen : A Sourcebook’; Routledge, 2005.