বই নিয়ে কিছু কথা
ভূমিকা
সভ্যতার কিছু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লক্ষণ জাতিগত সৌকর্য এবং নান্দনিকতার চিহ্ন হিসেবে কাজ করে। বই তাদের মধ্যে অন্যতম একটা সৃষ্টিশীল নিদর্শন। যাদের আমরা সভ্যজাতি বলি তাদের বৈশিষ্ট্যের অনেকগুলি মানদণ্ডের মধ্যে একটি নিশ্চিত ভাবে বই। তাই বই সমাজের উন্নতির একটি আলাদা গুরুত্ব বহন করে। পৃথিবীতে বর্তমানে প্রতিদিন কমবেশি প্রায় পাঁচ হাজার বই প্রকাশিত হয়। এমনকি বাংলা ভাষাতেই প্রতিবছর ৫০ হাজারের বেশি বই লেখা হয়। ঠিকভাবে কাকে বই বলা যাবে জাতিপুঞ্জ সেই সংজ্ঞা বেধে দিয়েছে।১ তবে বইয়ের সংজ্ঞায়নের আইন, রীতিনীতি এবং বিতর্কগুলি থেকেও অন্য একটি আকর্ষণীয় দিক আছে। সুনীল চট্টোপাধ্যায় তাঁর একটি বইয়ের শুরুর লাইনটিতেই লিখেছিলেন ‘এটি গ্রন্থ নয়, বই’। হয়তো পাঠ্যপুস্তক লিখতে গিয়ে তাঁর এই ধরনের স্যাটায়ারের ইচ্ছে হয়েছিল, কিন্তু তিনি একথা বলে যাননি বই থেকে গ্রন্থ হয়ে উঠতে গেলে কী প্রয়োজন। আমরা কেবল তার ধারণা করে নিতে পারি এইমাত্র।
ছাপানো বইয়ের ইতিহাস শুরু করা হয় গুটেনবার্গ এর সময় থেকে। ইউরোপীয় নবজাগরণের নিউক্লিয়াস কি কোন দর্শন হবে, নাকি তা ছড়িয়ে দেওয়ার গণমাধ্যম – এই নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। তবে এটা সত্যি যে, গুটেনবার্গের আবিষ্কার জ্ঞানচর্চার জগতে ক্রমশ একটি মৌলিক পার্থক্যের সূচনা করেছিল, যাকে আমরা ছাপার যুগ বলে আলাদা করতে পারি।
বই সভ্যতার একটি অন্যতম মানদণ্ড হলেও; তাকে কেন্দ্র করে যে একটি বিদ্যাচর্চার পরিমণ্ডল তৈরি করা যায় এই ধারনা খুব বেশি পুরোনো নয়। গত শতকের আশির দশক থেকে বই ক্রমশ একটি আলাদা ইতিহাস চর্চার বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে। এখানে স্বাভাবিকভাবেই দুটো প্রশ্ন আমরা আনতে পারি। প্রথমত, বই কোন সময়ের ইতিহাসকে উপস্থাপন করে? একটি উদাহরণ দিয়ে বললে হয়তো এই প্রশ্নটা আরও সহজে রাখতে পারব। ধরুন, বর্তমান সময়ে চর্যাপদ গ্রন্থটি প্রকাশ করা হলো। নিশ্চিতভাবে সেই কবিতার শব্দ এবং সৃষ্টি আজ থেকে হাজার বছর আগের। আবার যে অক্ষরগুলিতে বইটিকে আমরা পেলাম তার সৃষ্টি কিন্তু ততো পুরোনো নয়। এমনকি ছাপা, কালি, সম্পাদনা, বাঁধাই ইত্যাদি একেবারেই বর্তমানের। অর্থাৎ এক বিচারে সে অত্যন্ত প্রাচীন আবার অন্য বিচারে নতুন।
দ্বিতীয় প্রশ্নটি হল, বই কি ধরনের বিনিময়ের মাধ্যম? অর্থাৎ এর গতি কি কেবল লেখক থেকে পাঠকে? একটা এক রৈখিক চেতনা আমাদের ততদিন ছিল, যতদিন বইকে পুথির আধুনিক (সস্তা ও তুলনায় সহজলভ্য) রূপ হিসেবে দেখতে চেয়েছি। পরবর্তীতে আমাদের ভাবনা পরিবর্তন হয়েছে। প্রকাশের পর লেখকও আসলে সেই বইয়ের পাঠকই হয়ে যান। এরপর আবার আমাদের ধারণা পালটেছে। সিনেমা যেমন বিভিন্ন আলাদা সৃষ্টির মেল বন্ধনে তৈরি হয়ে থাকে বইও তেমনই। কেবল লেখক বা প্রকাশক নন, আরো বিভিন্ন ধরণের কারিগরি বিকাশের মধ্য দিয়ে একটি বই, বই হয়ে ওঠে, তাতে অলঙ্করণ, প্রেস, ডিস্ট্রিবিউশন ইত্যাদি থাকে।
বইয়ের গোপন কথা
সাধারণ পাঠকের কাছে ‘প্যালিওগ্রাফি’ শব্দটি সামান্য পরিচিত হলেও ‘কোডিকোলজি’ শব্দটি আমাদের কাছে নতুন। প্যালিওগ্রাফি কথাটি আসলে কী? খুব সহজে বলতে গেলে, বইয়ের অ্যানথ্রপলজি হল প্যালিওগ্রাফি। অর্থাৎ পুরোনো একটা বই (মূলত হাতেলেখা বই), তার অক্ষর, ভাষা, উৎস, প্রকাশের সময় ইত্যাদি চর্চা হয় এই বিদ্যায়। কেবল বই নয়, পাথুরে লিপির চর্চার প্রাণও এই বিদ্যা। অবশ্য এই কথা বললে যারা এপিগ্রাফি নিয়ে পড়েন বা পড়ান তারা খানিকটা রাগ করবেন।
যাই হোক, প্যালিওগ্রাফি যখন ছিলই তখন আর নতুন করে ‘কোডিকোলজি’ শব্দটির প্রয়োজন কী ছিল? কোন বইয়ের অক্ষর বা সময়টা জানাই বড় কথা নয় কিন্তু। বই আসলে একটা ভৌত উপাদান। তার কাগজ, কালি, ছাপার পদ্ধতি, অলঙ্করণ, বাঁধাই ইত্যাদি এমন অনেক বিষয় থাকে যা সময়ে সময়ে পালটে যায়। সেই ইতিহাসকে ধরার প্রচেষ্টা হয়েছে কোডিকোলজির মাধ্যমে, এই সঙ্গে পরিবৃত সমকালের সমাজ ও অর্থনীতি। অর্থাৎ বলতে চাইছি, কোডিকোলজির কাছে বই কেবল বই নয়, সে আসলে ভৌত উপাদানের মধ্যেই জীবন্ত একটি সামাজিক বস্তু, যার বিবর্তন রয়েছে।
এই কথার সূত্রে দুজন মানুষের নাম চলে আসে। প্রথম জন হলেন ফ্রেডরিখ অ্যাডফ এবার্ট (১৭৯১ – ১৮৩৪), সারা পৃথিবীতে তিনি পরিচিত হয়ে আছেন গ্রন্থাগারিক ও গ্রন্থ গবেষক হিসেবে। জার্মানির এই অসাধারণ পণ্ডিত মানুষটি খুব স্বল্প জীবনের প্রায় পুরোটাই কাটিয়েছেন স্যাক্সনে, গ্রন্থ গবেষণায়। তাঁর লেখা থেকেই জার্মান ভাষায় Handschriftenkunde শব্দটি যুক্ত হয় – এর অর্থ হল, গ্রন্থ বিষয়ক বিদ্যা। ইংরেজি বা অন্যান্য ভাষায় তখন এর প্রতিশব্দ বা চর্চার কোন রীতি দেখা যায় না, ইতালিতে কেবল ল্যাটিন পুথি থেকে ছাপানোর জন্য চার্চকেন্দ্রিক কিছু প্রচেষ্টা চলছিল। জার্মানির গ্রন্থ ইতিহাস চর্চার একটি বড় দুর্ভাগ্য যে, খুব অল্প বয়সে এই মানুষটি লাইব্রেরীর সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে মারা যান।
এরপর বেশ কয়েক বছর বাদের কথা, স্থান ফ্রান্স। অ্যালফঁসে ডেইন (1896 – 1964) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বাইজানটাইনের গ্রিক পুথি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তিনি দেখেছিলেন জার্মান ভাষায় গ্রন্থবিদ্যা বোঝাতে হ্যান্ডশ্রিফটেনকুন্ডের (Handschriftenkunde) মত আলাদা শব্দ থাকলেও ফরাসি বা ইংরেজিতে তা নেই। তাঁর রচনা থেকেই পরবর্তীতে ‘কোডিকোলজি’ শব্দটি জনপ্রিয়তা পায়। ল্যাটিন codex বা বহু বচনে codocis শব্দের অর্থ ‘বই’, বা বলা ভাল ‘হাতে লেখা বই’। তাই কোডিকোলজি অর্থ বই বিষয়ক বিদ্যা বা গ্রন্থবিদ্যা। এখানে প্যালিওগ্রাফির মত কেবল অক্ষর নিয়ে গবেষণা হয় না, তার সাথে যুক্ত হয়েছে ছাপা, বাঁধাই, বিজ্ঞাপন, বিপণন, আকৃতি, নান্দনিকতা, বিষয়বস্তু, প্রযুক্তিগত পরিবর্তন, পাঠ প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি নানান দিক।
বই নিয়ে বই
আবার আগের কথায় ফিরে আসি। গত শতকের আশির দশক থেকে বই নিয়ে আলাদা করে বিদ্যাচর্চা শুরু হয়। এই চর্চার বেশ কয়েকটা ভিন্ন দিক রয়েছে। লেখার বিষয়বস্তু নিয়ে, সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন, ধর্মীয় এমনকি সস্তা ছাপা নিয়ে সারা পৃথিবীতে উল্লেখ করার মত গবেষণা আছে। আবার ছাপা ও ছবির প্রযুক্তিগত বিবর্তন নিয়ে গবেষণা হয়েছে প্রচুর। বইয়ের ইতিহাস নিয়েও কাজ হয়েছে গত তিন দশকে। তবে গ্রন্থবিদ্যা নিয়ে যে তাত্ত্বিক আলোচনা – সে বিষয়ে বাংলা ভাষায় কাজ নেই বললেই চলে, তুলনায় লাইব্রেরি সাইন্স এখানে পাঠ্যবিষয় হিসেবে বেশি জনপ্রিয়। কিছুদিন আগে প্রকাশক কামরুল হাসান শায়ক ‘মুদ্রণশৈলী’ নিয়ে একটি সিরিজ গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন, বাংলায় এই ধরণের বইয়ের সংখ্যাও খুব কম।
বইয়ের ইতিহাস নিয়ে গত দুই দশকের প্রকাশিত গ্রন্থগুলির মধ্যে সাইমন এলিয়ট ও জনাথন রোজ সম্পাদিত A Companion to The History of The Book (২০০৭) বইটির কথা সবার আগে বলতে হবেই। পাঁচটি অংশে বিভক্ত ও চল্লিশটি অধ্যায়ে রচিত এই বইটির প্রতিটি বিষয়ের উপর লেখা আলাদা করে উল্লেখ করার মত। এতে যেমন বইয়ের টেক্সট, গ্রন্থপঞ্জী ইত্যাদি নিয়ে বলা রয়েছে, সেই সঙ্গে রয়েছে ছাপানো বইয়ের আগের যুগ অর্থাৎ সুমেরীয় ট্যাবলেট থেকে আজকের ছাপার ইতিহাস। এছাড়াও বইয়ের নান্দনিকতা ও প্রযুক্তির ইতিহাস নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।
এই বইটি প্রকাশের ঠিক দুই বছর আগে ডেভিড ফিংকেলস্টেইন এবং অ্যালিস্টার ম্যাকক্লে প্রকাশ করেছিলেন আরো একটি বই, যার নাম An Introduction to Book History, সংক্ষিপ্ত পরিসরে কেবল বইয়ের ইতিহাস নয়, কোডিকোলজির প্রায় সমস্ত দিক এতে আলোচনা রয়েছে। উপরের দুটি বই একসঙ্গে উল্লেখ করার একটি আলাদা কারণ রয়েছে। এই দুটি বইয়ের শেষ অধ্যায় লেখা হয়েছে বইয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে। মজার বিষয় হল, প্রায় একই সময়ে এই দুটো বই প্রকাশ পেলেও বইয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাঁদের ধারণা কিঞ্চিৎ আলাদা।
২০১৩ সালে মার্টিন লয়ন্স লেখেন Books: A Living History – বইটি, তবে এটি নিজেই খুব সহজলভ্য বই নয়। গ্রন্থবিদ্যার উপর আলোচনায় খুব সাম্প্রতিক গবেষকদের মধ্যে জেমস রাবনের নাম উল্লেখ না করলে এই আলোচনা একেবারেই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। তাকে গ্রন্থবিদ্যার জগতে ‘রাবণ’ বললেও মনে হয় অত্যুক্তি হবে না। ২০১৮ সালে তিনি একেবারে কোডিকোলজির তাত্ত্বিক বিষয় নিয়ে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন যার নাম ছিল What is the History of the Book? – নাম শুনে যাই মনে হোক না কেন, বইটির বিষয় কিন্তু গ্রন্থ-ইতিহাস নয়; বরং বইয়ের প্রচ্ছদ থেকে শুরু করে তার আইন, অর্থনীতি, পাঠক ও সর্বোপরি গ্রন্থের গুরুত্ব নিয়ে খুবই আকর্ষণীয় আলোচনা রয়েছে। তবে তার মূল ক্ষেত্র ইউরোপ। এর ঠিক দুই বছর পর ২০২০ -এর এপ্রিলের লকডাউনের সময় প্রকাশিত হয়েছে তার সম্পাদিত The Oxford Illustrated History of the Book বইটি। এই বই অক্সফোর্ডের ইলাস্ট্রেট সিরিজের একটি মূল্যবান কাজ। এখানে এশিয়ার গ্রন্থের ইতিহাসকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
গ্রন্থসংহার
কানাডার উইন্ডস্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লেসলি হওসাম আধুনিক গ্রন্থবিদ্যা গবেষণার মেথডলজি কেমন হবে এই নিয়ে বলতে গিয়ে বারবার উল্লেখ করেছেন, পৃথিবীর প্রতিটি বইয়ের একটি আলাদা ইতিহাস রয়েছে, কোডিকোলজি যাকে খুঁজতে সাহায্য করে। তাঁর ভাষায়- “ every copy of every book printed from the fifteenth to the early nineteenth century is unique, and that even the superficial uniformity of machine-printed books conceals a complicated web of cultural, economic and political decisions.”। তাঁর লেখা Old Books & New Histories: An Orientation to Book & Print Culture Studies – গ্রন্থে তিনি ডার্নটনের ‘কমিউনিকেশন সার্কিট থিওরি’ নিয়ে আলোচনা করেছেন। একজন লেখক তাঁর ব্যক্তিগত বা সমাজের কথা একটি টেক্সট হিসেবে লিপিবদ্ধ করেন। তারপর তা প্রকাশকের চাহিদা অনুযায়ী গৃহীত হয়। এরপর তাতে যুক্ত হয় প্রযুক্তি ও কারিগরি দক্ষতা। ছাপা হবার পর বইয়ের নির্দিষ্ট একটি গতি থাকে – বিপণন থেকে পাঠকের হাত পর্যন্ত। এই পুরো যাত্রা একটি সার্কিট বোর্ডের মত, তাই একে ‘সার্কিট থিওরি’ বলা হয়। তবে বইয়ের গুরুত্ব ওখানেই কিন্তু শেষ হয়ে যায় না। বই আসলে একটি পর্যাপ্ত সংখ্যার শব্দ দিয়ে পাঠক ও লেখকের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম। তাই বইয়ের এই হয়ে ওঠাকে কমিউনিকেশন সার্কিট থিওরি নামে ব্যাখ্যা করা হয়। আজকের ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদের যুগে বইকে ব্যাখ্যা করার আলাদা আরেকটি মডেল রয়েছে যাকে বলা হয় ‘কনিকাল বা শাঙ্কব মডেল’। লেখক তার ভাবনায় একটি বৃহৎ সম্ভাবনার অবকাশ তৈরি করেন, তা শব্দ, ভাষা, আভরণ, মূল্য ইত্যাদির পাতনে কমতে থাকে সেই সম্ভাবনার বিস্তার এবং তা ক্রমশ একটি বইয়ের আকারে একজন পাঠককে প্রভাবিত করে। অর্থাৎ একটি বৃহত্তর ভাবনা গ্রন্থ হয়ে একটি ব্যক্তি মানুষের কাছে পৌঁছায় যাকে শাঙ্কব আকৃতির মত কল্পনা করা হয়। এর বিপ্রতীপ মডেলও রয়েছে। অর্থাৎ এক মানুষের চিন্তাকে বহু মানুষে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যম হল বই। লেখক তার শিক্ষা, সংস্কার এবং মনোভাবকে সমাজে স্বীকৃতি দিতে, প্রতিষ্ঠিত করতে বইকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে।
লেসলি হওসাম উত্তর আমেরিকা মহাদেশের ইংরেজিভাষী গ্রন্থ গবেষকদের সম্বন্ধে বলেছেন- ‘The scholars working on these two aspects, archaeologists and anthropologists at one end and digital humanists at the other, share some assumptions about “the book” with the literary, library and historical scholars who focus on books from the middle ages to the twentieth century.’২ বই তার পাঠকের সঙ্গে সঙ্গে অক্ষর পালটায়, ফর্মাটে পরিবর্তন আনে ও সমাজ প্রতিটি আলাদা বইয়ের মাধ্যমে ইতিহাস গড়ে এসেছে, বর্তমানের কোবো, কিন্ডেল, ট্যাবের যুগ সেই সমাজকে কতটা প্রভাবিত করে এখন সেটাই দেখার।
টীকাঃ
১. A book is a non-periodical printed publication of at least 49 pages, exclusive of the cover pages, published in the country and made available to the public.
২. Howsam, Leslie. (2013). New Directions for Research and Pedagogy in Book History. Knygotyra, 60, p. 7-18.
https://scholar.uwindsor.ca/historypub/13
সহায়ক গ্রন্থঃ
১) Leslie Howsam, Old Books & New Histories: An Orientation to Book & Print Culture Studies, University of Toronto Press, 2006
২. James Raven, (Ed.) The Oxford Illustrated History of the Book, Oxford University Press, 2020.
বইয়ের ইতিহাস!! দারুণ লাগলো। এসব বিষয়ে ভাবিনি কখনও। নতুন ভাবনার খোরাক পেলাম।
আপনি কেবল একজন বিচক্ষণ ইতিহাস আগ্রহী নন, বহু পাঠের পাঠক। আমার লেখার গুণাগুণ আপনার মন্তব্য দিয়ে মূল্যায়ণ করার চেষ্টা করি। তাই আপনার মন্তব্যের প্রতিটি শব্দ আমার কাছে খুব দামী।
Very interesting & attractive field of study. Thanks.
interested to reprint in ‘Chirag’ quarterly literary (registered RNI 65392) journal if written permission is accorded..
আপনি কি অনুগ্রহ করে আপনার সঙ্গে ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনার ভালো লেগেছে এটা আমার কাছে সবচেয়ে বড়ো প্রাপ্তি।
প্যালিওগ্রাফি ও কোডিকোলজি শব্দ দুটোর পার্থক্যই জানতাম না। শুধু তাই নয়, বইয়ের ইতিহাস সম্পর্কে যা কিছু জানার ইচ্ছে তা তোমার লেখা পড়েই। ধীরে ধীরে গ্রন্থবিদ্যা নামে এক অসাধারণ রসে মজে যাচ্ছি তোমারই কলমের গুণে। আনন্দম।।
তুমি যাই বলো বই নিয়ে হয়তো তোমার আগ্রহ আমার তুলনায় বেশি, সে আমি জানি। আসলে বই নিয়ে অনেকের আগ্রহ আছে। তবে মূল ঝোঁকটা তার অক্ষরে। ক্রমাগত বইয়ের অবসানের কথা উত্থাপিত হওয়ায় ইংরেজি ভাষায় এগুলো নিয়ে খুব লেখালেখি চলছে। আমি এই চর্চাটা উপভোগ করতে চাইছি।
এই ব্যাপারটা একেবারে নতুন ধরনের এক বিষয়। শুনেছিলাম কিন্তু কিছু জানা ছিল না। সুতরাং লেখা টি ভাবনা চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে।
তবে বই এর সংজ্ঞা কি হতে পারে ভবিষ্যতে ঠিক বোধগম্য হলো না। লেখক তাঁর চিন্তা ভাবনা ও জ্ঞান প্রকাশিত করতে বই লিখছেন
বা প্রকাশ করছেন সেটা তো ঠিক স্ব- উৎসারিত বা স্সনটেনিয়াস হতে পারে না।
যাইহোক খুব সুন্দর ভাবে বিশ্লেষণের জন্য আমাদের মগজসম্পন্ন হয়ে উঠেছে। লেখক এর বিশেষ প্রতিবেদন ধন্যবাদ যোগ্য।
কুন্তলবাবু, এসব কি আপনার প্রকাশিতব্য বইয়ের আগে প্রস্তুতিমূলক লেখা চলছে? প্রকাশকও ঠিক করা আছে নিশ্চয়?
লেখাটি পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। বইয়ের ইতিহাস নিয়ে বাংলাভাষার পাঠক যে খুব উৎসাহী তা মনে হয় না। এই কারণে এটা পোর্টালের জন্য লেখা, যাতে বৃহত্তর পাঠকের কাছে পৌঁছাতে পারে। বইয়ের একটা অংশের ইতিহাস নিয়ে আমার আগ্রহ রয়েছে এবং সেটা বর্তমানে ইউরোপে খুব চর্চা হচ্ছে, ভারতের বাইরে তন্ত্রচর্চার বই বা সাহিত্য। এই নিয়ে সামান্য কিছু আলোচনা করেছি ফেসবুকে। উন্না ম্যাকিলভেন্না সাম্প্রতিককালে স্ক্যাণ্ডিনেভিয়ার ব্যালাড-এ তন্ত্র ও পরলোকের সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করেছেন। এই রকমের আরও কিছু লেখা প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাভাষায় এইসব নিয়ে লেখায় পাঠকদের আগ্রহ আছে বলে মনে হয় না। তাই এই নিয়ে বই প্রকাশ করা যাবে কিনা জানি না। আমার পরিচিত খসড়াখাতা নামের একটি প্রকাশনা এই নিয়ে বই করতে খুব আগ্রহী।
স্যার,আমি আপনার লেখাগুলো পড়ি।প্রতিটি লেখা চমৎকার।একটা সুমিষ্ট অভিজ্ঞতার মতো।আমি একজন ছাত্র।তাই ছাত্রসুলভ কিছু প্রশ্নও তৈরি হয়।জিজ্ঞাসাও।তবে আপাতত একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছি। আপনি লিখেছেন ‘বাংলা ভাষাতেই প্রতি বছর পঞ্চাশ হাজার বই বিক্রি হয়।’এই তথ্যটির উৎস সম্পর্কে কিছু বলুন। ভারত, বাংলাদেশ বা অন্য প্রদেশের বাংলা বই প্রকাশের হিসেব এতে যোগ করা আছে?
স্যার, ক্ষমা করবেন। আমার আগের লেখায় একটু অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি আছে। আপনি লিখেছেন বাংলা ভাষাতেই প্রতি বছর 50 হাজারের বেশি বই লেখা হয়।বিক্রি নয়।
আমার প্রশ্ন যদিও একই আছে।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ। বইমেলায় গিল্ডের পক্ষ থেকে ভাষণে এই তথ্যটি পাই। তবে তারা কিভাবে সংখ্যাটি নির্ধারণ করেছিলেন আমার জানা নেই। সাধারণ একটি ধারণা দেওয়ার জন্য এই সংখ্যাটি উল্লেখ করেছি।