সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

মধ্যযুগের কাশ্মীরের চার সংস্কৃত ইতিবৃত্তকার

মধ্যযুগের কাশ্মীরের চার সংস্কৃত ইতিবৃত্তকার

জয়ন্ত ভট্টাচার্য

জুলাই ১০, ২০২১ ১১৩৬ 3

ভারতীয় উপমহাদেশে প্রাচীন যুগে ইতিহাস লেখকদের যখন প্রায় কোন সন্ধানই পাওয়া যায় না, তখন মধ্যযুগের কাশ্মীরের চার সংস্কৃত ইতিবৃত্তকার – কল্হণ (দ্বাদশ শতাব্দী সাধারণাব্দ), জোনরাজ (১৩৮৯? – ১৪৫৯ সাধারণাব্দ), শ্রীবর (পঞ্চদশ – ষোড়শ শতাব্দী সাধারণাব্দ) ও শুকের (ষোড়শ শতাব্দী সাধারণাব্দ) লেখা ‘রাজতরঙ্গিণী’ নামে পরিচিত অবিচ্ছিন্ন ধারাবাহিক ইতিবৃত্ত গ্রন্থমালা আমাদের বিস্মিত করে। শুধু তাই নয়, এই চার ইতিবৃত্তকারদের জীবন মধ্যযুগের কাশ্মীরের রাজশক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত থাকার কারণে তাঁদের লেখা ইতিবৃত্ত প্রামাণিকতার নিরিখেও মূল্যবান। সপ্তদশ শতকে লিপিবদ্ধ ‘রাজতরঙ্গিণী’ গ্রন্থমালার শারদা পাণ্ডুলিপিগুলি আজও মধ্যযুগের কাশ্মীরের চার প্রতিভাশালী সংস্কৃত কবির ইতিবৃত্ত রচনার দক্ষতার সাক্ষ্য বহন করে চলেছে।

কাশ্মীরে সংস্কৃত ভাষায় ইতিবৃত্ত রচনার ঐতিহ্য বেশ প্রাচীন বলে অনুমান করা যায়। কল্হণ তাঁর গ্রন্থের শুরুতে (১.১১ – ১৯) রচনার উত্স হিসাবে পূর্ববর্তী শাসকদের মন্দিরপ্রতিষ্ঠা ও ভূমিদান সম্পর্কিত লেখ ও প্রশস্তিপট্টের সঙ্গে সঙ্গে ‘নীলমতপুরাণ’এবং পূর্ববর্তী ১১ জন ইতিবৃত্তকারদের লেখা গ্রন্থেরও উল্লেখ করেছেন। কল্হণের পূর্ববর্তী কাশ্মীরের এই ইতিবৃত্তকারদের মধ্যে সুব্রতর জীবন বা তাঁর রচিত ‘রাজকথা’ সম্পর্কে কিছুই জানা যায় না। হেলারাজ আনুমানিক নবম-দশম শতকের লেখক, তাঁর লেখা কেবল ‘বাক্যপদীয়’ গ্রন্থের সন্ধান পাওয়া গেছে। কল্হণের উল্লিখিত ১২০০০ শ্লোকে লেখা তাঁর ‘পার্থিবাবলি’ গ্রন্থ সম্বন্ধে কিছুই জানা যায় নি। পদ্মমিহির এবং ছবিল্লাকর সম্বন্ধেও কিছুই জানা যায় নি। ক্ষেমেন্দ্র (আনুমানিক ৯৯০ – ১০৭০ সাধারণাব্দ) প্রখ্যাত সংস্কৃত কবি, ‘বৃহৎকথামঞ্জরী’ তাঁর সর্বাধিক খ্যাতিমান রচনা। কিন্তু কল্হণের উল্লিখিত তাঁর ‘নৃপাবলি’ গ্রন্থের সন্ধান এখনও পাওয়া যায় নি।

কল্হণ:

কল্হণকে আদি মধ্যযুগের বিশিষ্টতম সংস্কৃত ইতিহাসকার বলে অভিহিত করলে সম্ভবত অত্যুক্তি হবে না। ভারতীয় উপমহাদেশে সমসাময়িক শাসকদের ‘চরিত’ বা তাঁদের ‘বংশাবলি’ রচনার রীতির সূত্রপাত সম্ভবত সাধারণাব্দের প্রথম সহস্রাব্দের মাঝামাঝি। বাণের ‘হর্ষচরিত’, সন্ধ্যাকর নন্দীর ‘রামচরিত’ বা বিল্হণের ‘বিক্রমাঙ্কদেবচরিত’ এই ধারার উল্লেখনীয় নিদর্শন। এমনকি, তারও আগে রচিত দণ্ডীর ‘দশকুমারচরিতে’র কাহিনিও অনেকাংশে ঐতিহাসিক। আদি মধ্যযুগের শিলালেখ ও তাম্রশাসন থেকেও এই জাতীয় রচনার অস্তিত্ব অনুভব করা যায়। কিন্তু কল্হণের আগে কারুর লেখা একটি সমগ্র কালপর্বের বা একটি বিশেষ ভৌগোলিক অঞ্চলের ইতিবৃত্ত এখনও পাওয়া যায় নি।

কল্হণের ‘রাজতরঙ্গিণী’ ইতিহাসমূলক সংস্কৃত কাব্যের ধারায় অনেক অর্থেই অনন্যপূর্ব। ‘রাজতরঙ্গিণী’র ৭৮২৬টি শ্লোক আটটি তরঙ্গে (অধ্যায়) বিভক্ত। এর মধ্যে প্রথম থেকে ষষ্ঠ তরঙ্গ তুলনামূলকভাবে ছোট, শ্লোকের সংখ্যা ৩৭৩, ১৭১, ৫৩০, ৭২০, ৪৮৩ ও ৩৬৮। সপ্তম তরঙ্গ বৃহত্তর, শ্লোকের সংখ্যা ১৭৩২ এবং অষ্টম তরঙ্গ বৃহত্তম, ৩৪৪৯টি শ্লোক সমন্বিত। কল্হণ গ্রন্থের শুরুতে (১.৫২) জানিয়েছেন, ৪২২৪ লৌকিক অব্দে বা ১০৭০ শকাব্দে (১১৪৮ সাধারণাব্দ) তাঁর রচনার সূত্রপাত। এই গ্রন্থের শেষে (৮.৩৪০৪) কল্হণ লিখেছেন ৪২২৫ লৌকিক অব্দে (১১৪৯ সাধারণাব্দ) তিনি এই রচনা সম্পূর্ণ করেন। কাশ্মীরের ঐতিহাসিক রাজবৃত্তের বর্ণনার সূত্রপাত তিনি করেছেন তৃতীয় গোনন্দের রাজত্বের সূচনাকাল (১১৮২ সাধারণপূর্বাব্দ) থেকে। প্রথম তিনটি তরঙ্গে বর্ণিত শাসকদের ইতিবৃত্তে তিনি কোন সাল-তারিখ উল্লেখ করেননি। কোনও ঐতিহাসিক ঘটনার সাল তিনি প্রথম উল্লেখ করেছেন চতুর্থ তরঙ্গে (৪.৭০৩) – ৩৮৮৯ লৌকিক অব্দ (৮১৩ সাধারণাব্দ)। সম্ভবত যথেষ্ট প্রামাণিক তথ্যের অভাবে, তিনি এর পূর্ববর্তী কোন সাল-তারিখ উল্লেখ করেননি। ‘রাজতরঙ্গিণী’র সমাপ্তি দ্বিতীয় লোহর রাজবংশের রাজা জয়সিংহের (রাজত্বকাল ১১২৮ – ১১৫৫ সাধারণাব্দ) রাজত্বকালের ১১৪৮ সাধারণাব্দ পর্যন্ত ইতিবৃত্ত বর্ণনায়।

কল্হণ বোধহয় মধ্যযুগের ইতিবৃত্তকারদের একমাত্র ব্যতিক্রমী লেখক, যিনি কোন শাসকের প্রতি অযথা প্রশস্তিতে তাঁর গ্রন্থকে ভারাক্রান্ত করেন নি। তিনি চতুর্থ তরঙ্গের ৩২৩ – ৩৩৫ শ্লোকে কাশ্মীরের রাজা ললিতাদিত্য মুক্তাপীড়ের বিশ্বাসঘাতকতার ও তৎকালীন বাংলার মানুষদের অসামান্য বীরতার বিবরণ দিয়েছেন। ললিতাদিত্য পরিহাসপুরের পরিহাসকেশব দেবতার স্বর্ণপ্রতিমাকে সাক্ষী রেখে শপথ নিয়েছিলেন, গৌড়ের রাজার কোন ক্ষতি করবেন না। তা সত্ত্বেও তিনি গুপ্তঘাতককে দিয়ে গৌড়ের রাজাকে হত্যা করান। ললিতাদিত্যকে এই জঘন্য বিশ্বাসঘাতকতার জন্য কোন শাস্তি না দেওয়ায়, পরিহাসকেশবের প্রতি গৌড়বাসীরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়। প্রতিশোধ নিতে, একদল গৌড়বাসী শারদা দেবীর দর্শনের জন্য আগত তীর্থযাত্রী সেজে কাশ্মীরে উপস্থিত হন। তাঁরা পরিহাসকেশবের মন্দির চত্বর ঘিরে ফেলেন এবং ভুল করে পরিহাসকেশবের মূর্তি ভেবে পার্শ্ববর্তী মন্দিরের রুপোর তৈরি রামস্বামীর মূর্তি ভেঙ্গে গুঁড়োগুঁড়ো করে চারদিকে ছড়িয়ে দেন। পরে, রাজা ললিতাদিত্যের সেনারা শ্রীনগর থেকে এসে তাঁদের সবাইকে হত্যা করে। কল্হণ লিখেছেন, রাজভক্ত কৃষ্ণকায়গৌড়ের প্রজাদের রক্তে বসুন্ধরা ধন্য হয়ে গেছে এবং যখন তিনি তাঁর গ্রন্থ লিখছেন তখনও প্রতিমাবিহীন রামস্বামীর মন্দির সবাইকে মনে করিয়ে দিচ্ছে গৌড়বীরদের এই অসম সাহসিকতার কথা। ব্যতিক্রমী কল্হণ নিজে শৈব হওয়া সত্ত্বেও শৈব শাসক ক্ষেমগুপ্তের (রাজত্বকাল ৯৫০ – ৯৫৮ সাধারণাব্দ) বৌদ্ধ ভিক্ষুর উপর নির্যাতন বা বৌদ্ধ বিহার ধ্বংসের (৬.১৭১ – ১৭৫) নিরপেক্ষ বর্ণনা করতে কুণ্ঠিত বোধ করেননি।

কল্হণের ব্যক্তিগত জীবন সম্বন্ধে বিশেষ কিছু জানা যায় না। ‘রাজতরঙ্গিণী’ গ্রন্থে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর পিতা চম্পক কাশ্মীরের দ্বিতীয় লোহর রাজবংশের রাজা হর্ষের (রাজত্বকাল ১০৮৯ – ১১০১ সাধারণাব্দ) মন্ত্রী ছিলেন। তাঁর আদি নিবাস সম্ভবত বর্তমান কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের বারামুলা জেলার পরিহাসপুরে। তিনি যে বিল্হণের রচিত ঐতিহাসিক কাব্য ‘বিক্রমাঙ্কদেবচরিত’ (একাদশ শতক) গভীরভাবে অধ্যয়ন করেছিলেন, তা তাঁর রচনা থেকে বোঝা যায়।

কল্হণের রচনা অন্ত মধ্যযুগের কাশ্মীরে যথেষ্ট পরিচিতি অর্জন করেছিল। ‘বাহর-উল-অস্মার’ নামে, ফার্সি ভাষায় কল্হণের ‘রাজতরঙ্গিণী’র প্রথম অনুবাদ করা হয় কাশ্মীরের সুলতান জৈন-উল-আবিদিনের (রাজত্বকাল ১৪১৮ – ১৪৭০ সাধারণাব্দ) নির্দেশে। ১৫৮৮ সালে আকবর যখন কাশ্মীরে যান, তখন তাঁকে সংস্কৃত ‘রাজতরঙ্গিণী’র একটি পাণ্ডুলিপি উপহার দেওয়া হয়। এই পাণ্ডুলিপিটিতে কল্হণ, জোনরাজ, শ্রীবর ও শুকের রচিত চারটি ‘রাজতরঙ্গিণী’ একসঙ্গে সম্মিলিত ছিল। আকবরের নির্দেশে এই চারটি সংস্কৃত ‘রাজতরঙ্গিণী’র সম্ভবত প্রথম ফার্সি অনুবাদ করেছিলেন শাহ মুহম্মদ শাহাবাদী। পরে, ‘বাহর-উল-অস্মার’ গ্রন্থের সম্প্রসারণ করে, আব্দুল কাদির বদাউনি ১০০৩ হিজরি সনে (১৫৯৫ সাধারণাব্দ) চারটি ‘রাজতরঙ্গিণী’র একটি সহজতর ফার্সি অনুবাদের কাজ সমাপ্ত করেন। জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে, আনুমানিক ১৬০৫ – ১৬০৭ সালের মধ্যে কোনও অজ্ঞাত লেখক ‘ইন্তিখাব-ই-তারিখ-ই-কাশ্মীর’ (কাশ্মীরের ইতিহাসের সংক্ষিপ্তসার) নামে চারটি ‘রাজতরঙ্গিণী’র একটি ফার্সি অনুবাদ রচনা করেন। এরপর, ১৬১৮-১৬২১ সাধারণাব্দে এক কাশ্মীরবাসী, হায়দার মালিক চাদুরা ফার্সি ভাষায় একটি ‘তারিখ-ই-কাশ্মীর’ (কাশ্মীরের ইতিহাস) রচনা করেন। এই রচনাটি প্রকৃতপক্ষে চারটি ‘রাজতরঙ্গিণী’র একটি সংক্ষিপ্তসার। ১৬৬৪ সাধারণাব্দে ফরাসি পর্যটক ফ্রাঁসোয়া বার্নিয়ার কাশ্মীরে যান। তিনি হায়দার মালিক চাদুরার ফার্সি ‘তারিখ-ই-কাশ্মীর’ গ্রন্থের একটি ফরাসি অনুবাদ করেছেন বলে জানিয়েছেন, কিন্তু এই অনুবাদ খুঁজে পাওয়া যায় নি। কলকাতার সংস্কৃত কলেজের এক প্রাক্তন অধ্যক্ষ, অঁতনিত্রোয়ে, ১৮৪০ – ১৮৫২ সালে তিন খণ্ডে কল্হণের ‘রাজতরঙ্গিণী’র ফরাসি অনুবাদ ‘রাজতরঙ্গিণী: হিস্তোয়ার দে রোয়া দু কাশ্মীর’ সম্পূর্ণ করেন। ১৮৭৯ ও ১৮৮৭ সালে দুই খণ্ডে যোগেশ চন্দ্র দত্ত রচিত কল্হণের ‘রাজতরঙ্গিণী’র প্রথম ইংরেজি অনুবাদ ‘কিংগস অফ কাশ্মীর: বিইং অ্যা ট্রান্সলেশন অফ দ্য সংস্কৃত ওয়ার্ক রাজতরঙ্গিণী অফ কহ্লণ পণ্ডিত’ নামে প্রকাশিত হয়। এরপর ১৮৯২ – ১৯০০ সালে প্রকাশিত হয় দুই খণ্ডে মার্ক অরেলস্টাইনের কল্হণের ‘রাজতরঙ্গিণী’র ইংরেজি অনুবাদ, ‘কল্হণস রাজতরঙ্গিণী: অ্যা ক্রনিকল অফ দ্য কিংগস অফ কাশ্মীর’। ১৯৩৫ সালে প্রকাশিত হয় রঞ্জিত সীতারাম পণ্ডিতের ইংরেজি অনুবাদ, “রাজতরঙ্গিণী: দ্য সাগা অফ দ্য কিংগস অফ কাশ্মীর’।

জোনরাজ:

ক্রমাগত রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের কারণে কল্হণের ‘রাজতরঙ্গিণী’ রচনার পর প্রায় তিন শতাব্দী যাবৎ কোন সংস্কৃত কবি সম্ভবত আর কাশ্মীরের ইতিবৃত্ত লেখার প্রয়াস করেন নি। কল্হণের তিন শতক পরে জোনরাজ আবার ইতিবৃত্ত রচনার কাজ শুরু করেন। জোনরাজ তাঁর গ্রন্থে কোনও পূর্বসূরির রচনার উল্লেখ না করায় এই তিনশ বছরে কাশ্মীরে সংস্কৃতরাজবৃত্ত রচনার বিষয়ে কিছুই জানা সম্ভব হয়নি।

জোনরাজ কাশ্মীরের খ্যাতিমান সুলতান জৈনুল আবিদিনের (রাজত্বকাল ১৪১৮ – ১৪১৯ ও ১৪২০ – ১৪৭০ সাধারণাব্দ) রাজত্বকালে তাঁর ধর্মাধিকারী (আইন মন্ত্রী) শির্যভট্টের পৃষ্ঠপোষকতায় ৯৭৬টি শ্লোকে ‘দ্বিতীয় রাজতরঙ্গিণী’ রচনা করেন। অবশ্য জোনরাজ, শ্রীবর ও শুকের রচিত গ্রন্থের প্রকৃত নাম আদৌ ‘রাজতরঙ্গিণী’ কিনা এ বিষয়ে সংশয় রয়েছে। কল্হণের ‘রাজতরঙ্গিণী’র ধারাবাহিকতা রক্ষা করে, তিনি তাঁর ‘রাজতরঙ্গিণী’ শুরু করেন ৪২২৫ লৌকিক অব্দ (১১৪৯ সাধারণাব্দ) থেকে দ্বিতীয় লোহর রাজবংশের রাজা জয়সিংহের রাজত্বকালের অবশিষ্ট অংশের বর্ণনা করে (২৮ – ৩৯ শ্লোক)। এরপর তিনি জয়সিংহের পরবর্তী শাসক পরমাণুক থেকে কোটাদেবী (কোটারাণী) পর্যন্ত ১৪ জন শাসকের রাজত্বকালের বর্ণনা করেছেন (৪০ – ৩০৭ শ্লোক)। ১৩৩৯ সাধারণাব্দে কোটাদেবীকে সিংহাসনচ্যুত করে শামসুদ্দিন শাহমীর কাশ্মীরের ক্ষমতা দখল করেন। জোনরাজ শাহমীর বংশের ৮ জন শাসকের বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি ৪৫৩৫ লৌকিক অব্দে (১৪৫৯ সাধারণাব্দ) নিজের প্রয়াণের দিন পর্যন্ত শাহমীর বংশের অষ্টম শাসক জৈনুল আবিদিনের রাজত্বকালের বর্ণনা লিপিবদ্ধ করে গেছেন (৭৫০ – ৯৭৬ শ্লোক)। জোনরাজ কাশ্মীরের তৎকালীন শাসকের যথেষ্ট অনুগ্রহ লাভ করেছিলেন, তাই তাঁর রচনায় কল্হণের মতো নিরপেক্ষতা দেখা যায় না। তিনি জৈনুল আবিদিনকে মূর্তিমান ধর্ম তথা যোগীরাজ (৫৭৯ শ্লোক), হরির অবতার (৯৩৫ শ্লোক) বা নারায়ণের অবতার (৯৭৩ শ্লোক) বলে বর্ণনা করতে কোন রকম অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন নি।

জোনরাজ ‘দ্বিতীয় রাজতরঙ্গিণী’ গ্রন্থে নিজের সম্বন্ধে বিশেষ কিছু না জানালেও, তাঁর রচিত রাজনক জয়ানকের ‘পৃথ্বীরাজবিজয়’ এবং মঙ্খের ‘শ্রীকন্ঠচরিতে’র দুটি টীকায় নিজের সম্বন্ধে কিছু তথ্য জানিয়েছেন। ‘পৃথ্বীরাজবিজয়’ মহাকাব্যের প্রথম সর্গের টীকার পুষ্পিকায় জোনরাজ জানিয়েছেন, তাঁর পিতার নাম ভট্ট নোনরাজ ও পিতামহের নাম লোলরাজ। খুব সম্ভবত ১৩৮৯ সাধারণাব্দে তাঁর জন্ম। ‘শ্রীকন্ঠচরিতে’র টীকার পুষ্পিকা থেকে জানা যায় তিনি ‘রাজানক’ উপাধি লাভ করেছিলেন। ১৩৭০ শকাব্দে (১৪৪৯ সাধারণাব্দ) তিনি ভারবির ‘কিরাতার্জুনীয়ম্’ গ্রন্থের টীকা রচনা সমাপ্ত করেন। ‘কথাকৌতুক’ গ্রন্থে জোনরাজের শিষ্য শ্রীবর তাঁকে জ্যোত্স্নাকর নামে উল্লেখ করেছেন।

১৫৮৮ সাধারণাব্দে আকবরকে উপহার দেওয়ার জন্য জোনরাজের ‘রাজতরঙ্গিণী’ গ্রন্থের দেবনাগরী লিপিতে লেখা পাণ্ডুলিপিতে ষোড়শ শতকের শেষার্ধে কোনও অজ্ঞাত লেখকের সংযোজিত প্রায় ৩৫০টি অতিরিক্ত শ্লোক দেখা যায়। আধুনিক বিদ্বানরা এই অজ্ঞাত কাশ্মীরের ইতিবৃত্তকারকে ‘ছদ্ম-জোনরাজ’ বলে উল্লেখ করেন।

শ্রীবর:

জোনরাজের প্রয়াণের পর কাশ্মীরের ইতিবৃত্ত রচনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তাঁর শিষ্য শ্রীবর। জোনরাজের প্রয়াণে ‘দ্বিতীয় রাজতরঙ্গিণী’ যেখানে এসে থেমে গিয়েছিল, শ্রীবরের লেখা ‘তৃতীয় রাজতরঙ্গিণী’র বর্ণনার শুরু সেই ৪৫৩৫ লৌকিক অব্দ (১৪৫৯ সাধারণাব্দ) থেকে। শ্রীবরের ‘তৃতীয় রাজতরঙ্গিণী’র ২২৪১টি শ্লোক চারটি তরঙ্গে বিভক্ত। ৮০২টি শ্লোকে সম্পূর্ণ বৃহত্তম প্রথম তরঙ্গটি সাতটি সর্গে বিভক্ত। জৈনুল আবিদিনের রাজত্বকালের শেষ ১১ বছরের (১৪৫৯ – ১৪৭০ সাধারণাব্দ) ঘটনাবলি প্রথম তরঙ্গের উপজীব্য। সম্ভবত এই কারণে তাঁর গ্রন্থ ‘জৈন রাজতরঙ্গিণী’ নামে পরবর্তীকালে পরিচিত হয়। ২১৯টি শ্লোকে লেখা দ্বিতীয় তরঙ্গে তিনি পরবর্তী সুলতান হায়দার শাহের রাজত্বকালের (১৪৭০ – ১৪৭২ সাধারণাব্দ) ইতিবৃত্ত বর্ণনা করেছেন। ৫৬৪টি শ্লোকবিশিষ্ট তৃতীয় তরঙ্গের বিষয় সুলতান হাসন শাহের রাজত্বকাল (১৪৭২ – ১৪৮৪ সাধারণাব্দ) এবং ৬৫৬টি শ্লোক সমন্বিত চতুর্থ তরঙ্গের বিষয় সুলতান মোহাম্মদ শাহের প্রথম পর্বের রাজত্বকাল (১৪৮৪ – ১৪৮৬ সাধারণাব্দ)। মোহাম্মদ শাহকে পরাস্ত করে ৪৫৬২ লৌকিক অব্দে (১৪৮৬ সাধারণাব্দ) ফতহ শাহের সিংহাসনে আরোহণ পর্যন্ত কাশ্মীরের ইতিবৃত্ত তাঁর রচনায় পাওয়া যায়।

শ্রীবরের ‘রাজতরঙ্গিণী’ থেকে বোঝা যায়, তিনি জৈনুল আবিদিন, হায়দার শাহ ও হাসন শাহের পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেছিলেন। এই গ্রন্থে শ্রীবর নিজের সম্বন্ধে বেশ কিছু তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, জৈনুল আবিদিন তাঁকে পুত্রের মতো স্নেহ করতেন (১.১.১১) এবং সুলতান হাসন শাহ তাঁকে গীতাঙ্গাধিপতি (সঙ্গীত বিভাগের একটি অংশের প্রধান) নিযুক্ত করেন (৩.২৪২)। শ্রীবরের সংস্কৃত ও ফার্সি দুই ভাষাতেই সমান জ্ঞান ছিল। মোহাম্মদ শাহের দ্বিতীয় পর্বের রাজত্বকালে (১৪৯৩ – ১৫০৫ সাধারণাব্দ) ১৫০৫ সাধারণাব্দে তিনি সুফিকবি আব্দুর রহমান জামিরের (১৪১৪ – ১৪৯২ সাধারণাব্দ) ফার্সি ভাষায় লেখা ‘ইউসুফ-ওয়া-জুলায়খা’ গ্রন্থের অনুসরণে ১৫টি সর্গে ‘কথাকৌতুক’ নামে একটি সংস্কৃত কাব্যও রচনা করেছিলেন।১০

শুক:

শুক, তাঁর ‘চতুর্থ রাজতরঙ্গিণী’ গ্রন্থে (১.৮) লিখেছেন, তাঁর গুরু প্রাজ্যভট্ট ৪৫৬২ লৌকিক অব্দ (১৪৮৬ সাধারণাব্দ) থেকে ৪৫৮৯ লৌকিক অব্দ (১৫১৩ সাধারণাব্দ) পর্যন্ত ২৭ বছরের, অর্থাৎ সুলতান ফতহ শাহের প্রথম বারের রাজত্বকালের (১৪৮৬ – ১৪৯৩ সাধারণাব্দ) শুরু থেকে দ্বিতীয় বারের রাজত্বকালের(১৫০৫ – ১৫১৪ সাধারণাব্দ) প্রথম ৮ বছরের কাশ্মীরের ইতিবৃত্ত নিয়ে ‘রাজাবলিপতাকা’ নামের একটি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। শুক জানিয়েছেন, কাশ্মীরের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রাজ্যভট্ট তাঁর গ্রন্থ অসমাপ্ত রাখতে বাধ্য হন। প্রাজ্যভট্টের ‘রাজাবলিপতাকা’র এখনও কোন সন্ধান পাওয়া যায় নি।

প্রাজ্যভট্টের শিষ্য শুকের ‘চতুর্থ রাজতরঙ্গিণী’ গ্রন্থ দুটি তরঙ্গে বিভক্ত। বর্তমানে প্রাপ্ত পাণ্ডুলিপিসমূহে দেখা যায়, শুক প্রথমে ১৪৮৬ – ১৫১৩ সাধারণাব্দ পর্যন্ত কাশ্মীরের ইতিবৃত্ত প্রাজ্যভট্টের অনুসরণ করে বর্ণনা করার পর, ১৫১৩ সাধারণাব্দ থেকে ১৫৮৬ সাধারণাব্দে আকবরের কাশ্মীর বিজয় পর্যন্ত কালপর্বের কাশ্মীরের ইতিবৃত্ত নিয়ে নিজের রচিত বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেছেন। ‘চতুর্থ রাজতরঙ্গিণী’র কয়েকটি পাণ্ডুলিপিতে ৯৫০টি শ্লোক পাওয়া যায়। কোনও কোনও আধুনিক বিদ্বানদের মতে, শুক তাঁর ‘চতুর্থ রাজতরঙ্গিণী’ গ্রন্থে ৩৯৭টি শ্লোকে কেবল ১৫৩৮ সাধারণাব্দ পর্যন্ত কাশ্মীরের ইতিবৃত্ত বর্ণনা করেছিলেন। তিনি প্রথম তরঙ্গের ২৫৮টি শ্লোকে সুলতান মুহাম্মদ শাহের চতুর্থ বারের রাজত্বকালের অবসান পর্যন্ত (১৫২৮ সাধারণাব্দ) বর্ণনা করার পর দ্বিতীয় তরঙ্গের ১৩৯টি শ্লোকে সুলতান শামসুদ্দিনের রাজত্বকালের প্রথম বছরের (১৫৩৮ সাধারণাব্দ) বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেছেন। অন্য কোনও পরবর্তী লেখক দ্বিতীয় তরঙ্গের ১৫৩৮ – ১৫৮৬ সাধারণাব্দ পর্যন্ত ইতিবৃত্তের অংশটি ১৫৮৮ সাধারণাব্দে আকবরকে ‘রাজতরঙ্গিণী’র পাণ্ডুলিপি উপহার দেওয়ার সময় সংযোজিত করেছেন।১১

শুক নিজের সম্বন্ধে প্রায় কিছুই তাঁর গ্রন্থে জানান নি। তিনি শুধু জানিয়েছেন (১.৩, ১.১০) তাঁর পিতার নাম বুদ্ধ্যাশ্রয়। সম্ভবত শ্রীনগর শহর তাঁর জন্মস্থান।১২

১৮৯৮ সালে যোগেশ চন্দ্র দত্তের লেখা জোনরাজ, শ্রীবর ও শুকের ‘রাজতরঙ্গিণী’র প্রথম ইংরেজি অনুবাদ ‘কিংগস অফ কাশ্মীর: বিইং অ্যা ট্রান্সলেশন অফ দ্য সংস্কৃত ওয়ার্কস অফ জোনরাজ, শ্রীবর অ্যান্ড অফ প্রাজ্যভট্ট অ্যান্ড শুক’ নামে তাঁর ‘কিংগস অফ কাশ্মীর’ নামের অনুবাদ গ্রন্থাবলির তৃতীয় খণ্ড হিসাবে প্রকাশিত হয়। রঘুনাথ সিংহ ১৯৭২ সালে জোনরাজের ‘রাজতরঙ্গিণী’, ১৯৭৬ সালে শুকের ‘রাজতরঙ্গিণী’ ও ১৯৭৭ সালে দুই খণ্ডে শ্রীবরের ‘জৈনরাজ তরঙ্গিণী’র হিন্দি অনুবাদ প্রকাশ করেন। ১৯৯৪ সালে কাশীনাথ ধর শ্রীবরের ‘জৈনরাজ তরঙ্গিণী’র একটি ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করেন।

পঞ্চম রাজতরঙ্গিণী:

‘রাজতরঙ্গিণী’র অবিচ্ছিন্ন ধারাবাহিকতার আকর্ষণ ঊনবিংশ শতকের শেষে কাশ্মীরের সংস্কৃত ভাষার বিদ্বান দামোদর কাউলকে প্রেরিত করেছিল পঞ্চম ‘রাজতরঙ্গিণী’ রচনা করতে। ১৫৮৬ – ১৮৯২ সাধারণাব্দ পর্যন্ত কাশ্মীরের ইতিহাস নিয়ে লেখা এই গদ্য ও পদ্যের মিশ্রিত রচনা প্রকাশিত হবার আগেই ১৮৯২ সালে তাঁর জীবনাবসান হওয়ায় এই গ্রন্থ পাণ্ডুলিপি হিসাবেই রয়ে যায়।১৩

উপসংহার:

কল্হণ ‘রাজতরঙ্গিণী’র শুরুতেই (১.৭ – ১০) জানিয়েছেন, তাঁর মতে যে কবি অনুরাগ ও দ্বেষ থেকে মুক্ত হয়ে নিরপেক্ষভাবে‘ভূতার্থ’ অর্থাৎ অতীতের ঘটনাবলির বিশ্লেষণ করতে পারেন তিনিই শ্রেষ্ঠ। তাঁর রচনা তাই পূর্ববর্তী ইতিবৃত্তকারদের খণ্ডিত বর্ণনাকে যুক্ত করে এক ত্রুটিমুক্ত ধারাবাহিক ‘ভূতার্থবর্ণন’। অতীতের ঘটনাবলির নিছক বর্ণনার পরিবর্তে বিশ্লেষণ ও নিরপেক্ষতার প্রতি কল্হণের আকাঙ্ক্ষা মধ্যযুগের ভারতে ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সূচক।১৪ কল্হণের উত্তরসূরিরা তাঁদের রচনার মাধ্যমে কাশ্মীরের মধ্যযুগের ইতিহাসের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে সফল হলে ও তাঁর ইতিহাসভাবনার উত্তরাধিকার কতটা বহন করতে সক্ষম হয়েছেন সে বিষয়ে সংশয় আছে। মধ্যযুগের কাশ্মীরের চার ইতিবৃত্তকারের রচনা শুধুই কি রাজবৃত্ত না একই সঙ্গে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস এই নিয়েও বিতর্ক রয়েছে।

পাদটীকা:

১. কাশ্মীরের বিদ্বান রাজানক রত্নকণ্ঠ কল্হণ, জোনরাজ, শ্রীবর ও শুকের রচিত ‘রাজতরঙ্গিণী’র পাণ্ডুলিপিগুলি সংগ্রহ করে প্রথমে ভূর্জপত্রের উপর এবং তারপর, ১৫৭০ শকাব্দ (১৬৪৮-৯ সাধারণাব্দ) থেকে ১৬০৩ শকাব্দের (১৬৮৫-৬ সাধারণাব্দের) মধ্যবর্তী সময়ে কাশ্মীরে নির্মিত কাগজের উপর শারদা লিপিতে লিপিবদ্ধ করেন [VishvaBandhu, Rājatarangiī of Kalhaa, Part I (Taraṅgas I-VII); Hoshiarpur: Vishveshvaranand Vedic Research Institute, 1963, p. xxiv]। রাজানক রত্নকন্ঠের লেখা এই পাণ্ডুলিপিগুলিই ‘রাজতরঙ্গিণী’র প্রাচীনতম পাণ্ডুলিপি।

২. কল্হণের ‘রাজতরঙ্গিণী’তে ব্যবহৃত লৌকিক অব্দ কাশ্মীর ও পার্শ্ববর্তী হিমালয়ে অবস্থিত রাজ্যগুলিতে অন্ত মধ্যযুগ পর্যন্ত প্রচলিত অব্দ; লৌকিক সংবত্সর, শাস্ত্র সংবত্সর বা সপ্তর্ষিসংবৎ নামেও পরিচিত। এই অব্দের সূত্রপাত সপ্তর্ষি মণ্ডলের গতি নিয়ে প্রাচীন ভারতের একটি কাল্পনিক ধারণা থেকে। এই কাল্পনিক ধারণা অনুযায়ী, সপ্তর্ষি মণ্ডলের খগোলে সম্পূর্ণ আবর্তনকাল ২৭০০ সৌর বছরে এবং তাই ২৭টি নক্ষত্রের প্রত্যেকটিতে অবস্থিতির কাল ১০০ সৌর বছর। লৌকিক অব্দের সূচনাকাল কলিযুগের সূচনার ২৬ বছর পর থেকে অর্থাৎ (৩১০২ – ২৬=) ৩০৭৬ সাধারণ পূর্বাব্দ থেকে। সপ্তর্ষিসংবৎ আবর্তনশীল হলেও লৌকিক অব্দের সংবত্সর গণনা রৈখিক।

৩. Pandit, R.S.,(tr.) Rājataranginī,The Saga of the Kings of Kaśmīr; New Delhi: Sahitya Akademi, 1968 [1935], p. xxix.

৪. Stein, M.A., (tr.) Kalhaa’sRājataragiī, A Chronicle of the Kings of Kaśmīr, Vol.1; Westminster: Archibald Constable and Company, pp. 6-10, 1900

৫. Ali, M. Athar, “Translations of Sanskrit Works at Akbar’s Court” in Social Scientist, Vol. 20, No.9-10; pp. 43-44, 1992

৬. Pandit, R.S., (tr.) Rājataranginī,The Saga of the Kings of Kaśmīr; New Delhi: Sahitya Akademi, pp. xiii-xiv, .1968 [1935]

৭. Kaul, S., (ed.). Rājataragiīof Śrīvara and Śuka,Woolner Indological series 8; Hoshiarpur: Vishveshvaranand Institute, p. 4, 1966

৮. Kaul, S., (ed.). Rājataragiīof Jonarāja. Woolner Indological series 7; Hoshiarpur: Vishveshvaranand Institute, p. 31-34, 1967

৯. Slaje, Walter, Medieval Kashmir and the Science of History, Madden Lecture 2003-4; Austin: South Asia Institute, The University of Texas at Austin, p. 13-14, 2004

১০. Hasan, M.,Kashmīr under the Sultāns; Calcutta: Iran Society. p. 3, 1959

১১. Singh, R., Shuk-Rajatarangini and RajataranginiSangrah; Varanasi: Chowkhamba Sanskrit Series Office, p.10, 1976

১২. Singh, R., Shuk-Rajatarangini and RajataranginiSangrah; Varanasi: Chowkhamba Sanskrit Series Office, p. 9, 1976

১৩. Bhattarai, B.,(ed.). Critical edition of DāmodaraPaṇḍita’sPañcamīRājataragiī; Marburg (unpublished Master’s thesis), pp. 1-5, 2010

১৪. Thapar, Romila, The Past Before Us: Historical Traditions of Early North India; Cambridge, Massachusetts: Harvard University Press, pp. 603-604, 2013

লেখক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তিবিদ্যার স্নাতক এবং বিগত তিন দশক ধরে বিমান প্রযুক্তিবিদ্যার সঙ্গে যুক্ত। ইতিহাসের আগ্রহী পাঠক। ইতিহাস নিয়ে লেখালেখির সূত্রপাত সাম্প্রতিক।

মন্তব্য তালিকা - “মধ্যযুগের কাশ্মীরের চার সংস্কৃত ইতিবৃত্তকার”

  1. অত্যন্ত তথ্য সমৃদ্ধ আলোচনা। রাজতরঙ্গিনী ও কল্হন এর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা সংগ্রহে রাখার মত। লেখককে ধন্যবাদ।

  2. অত্যন্ত মূল্যবান ও তথ্য সমৃদ্ধ প্রবন্ধ। বহু নতুন বিষয় জানলাম। লেখককে অজস্র ধন্যবাদ।

মন্তব্য করুন

আপনার ইমেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।