সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

সাংস্কৃতিক ইতিহাস

প্রাচীন ভারতের ভাষাচিন্তার কথা উঠলেই যাঁর নাম সবার প্রথমে মাথায় আসে তিনি হলেন পাণিনি। তাঁর সময়কালটি নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক আছে। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীর কাছাকাছি সময়ে তাঁর লেখা অষ্টাধ্যায়ী সেকালে যেমন প্রবল প্রভাব বিস্তার করেছিল, তেমনি একালেও বিভিন্ন ইউরোপীয় ভাষায় অনুবাদের মধ্যে দিয়ে আন্তর্জাতিক ভাষাচর্চায় তা প্রভাবশালী ও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পাণিনির আগেই শব্দ উৎস সন্ধান করে যাস্ক লিখেছিলেন তাঁর নিরুক্ত। অন্যান্য নিরুক্তকারদের রচনা আমরা পাই নি। পাণিনির পরে ভারতীয় ব্যাকরণ চর্চায় যে দুই বিখ্যাত ভাষাচিন্তকের নাম আমরা পাই তাঁরা হলেন খ্রীষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীর কাত্যায়ন এবং খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকের পতঞ্জলি।
ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে ধর্ম এবং রাজনীতির সম্পর্ক সমসাময়িক ভারতে খুবই প্রাসঙ্গিক। অন্তত স্বাধীন ভারতের রাষ্ট্রের যে রূপ আমরা দেখতে অভ্যস্ত ছিলাম, তা গত কয়েক বছরে কিছুটা হলেও বদলেছে। আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বহু দেশই ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটি সাংবিধানিক অর্থে ব্যবহার করলেও রাষ্ট্র, রাজনীতি এবং ধর্মের সম্পর্ক কিন্তু ইতিহাসগত ভাবেই স্বীকৃত। আলোচ্য প্রবন্ধটি সেই আন্তঃসম্পর্ককেই মূল বিষয় ধরে রচিত। তবে এ ক্ষেত্রে স্থান ও সময় প্রাচীন কালে নিহিত। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, গুপ্ত যুগে মধ্য ভারতের বিদিশা নগরীই এই প্রবন্ধে আলোচিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ভাবে বেছে নেওয়া হয়েছে উদয়গিরির বরাহ অবতার মূর্তিটিকে। শিল্প ও স্থাপত্যের নিরিখে মূর্তিটি নতুন ভাবে বর্ণনার দাবি রাখে না। তবে রাজনৈতিক ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রেও মূর্তিটি বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য. প্রবন্ধের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা কীভাবে ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক আধিপত্য স্থাপন এবং একটি অঞ্চলকে সুসংহত করার চেষ্টা করে। সেই আলোচনার কেন্দ্রেই রয়েছে এই মূর্তিটি।