সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

প্রাগিতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব

বছর কয়েক আগে যখন অধ্যাপক সোয়ান্টে পেবোর অবশ্যপাঠ্য ‘আত্মজীবনী’ পড়ার সুযোগ আসে তখন দু’টি জিনিস মনে দাগ কেটেছিল। এক, গবেষণার ফলাফলকে নিরপেক্ষ ভাবে বিশ্লেষণ করার ব্যাপারে তাঁর নির্মোহ, প্রায়-ম্যানিয়াগ্রস্ত খুঁতখুঁতুনি। দুই, ল্যাবরেটরির প্রতিটি সাফল্যে নিজের ছাত্রছাত্রীদের মেধা ও পরিশ্রমের বিস্তারিত বর্ণনা। সেই জন্যে কয়েকদিন আগে নোবেল কমিটির “সোয়ান্টে পেবো অসাধ্যসাধন করেছেন....জন্ম দিয়েছেন একটি বিজ্ঞানের একটি নতুন বিষয় – প্যালিওজিনোমিক্স... ওঁর অনন্য আবিষ্কারগুলি থেকেই আজ আমরা জানতে পারছি কেমন করে বিবর্তনের পথে হেঁটে কি ভাবে আমরা সবাই 'মানুষ' হয়ে উঠলাম” ঘোষণা শুনে যখন আরেকজন বিজ্ঞানী বললেন, “পেবোকে তো চিনি।
যখন মানুষ আফ্রিকায় চামড়া পরছে, শিশুকে কবর দিচ্ছে, পাথরের ওপরে ক্রশহ্যাচ আঁকছে, তখন ইউরোপে ‘নিয়েণ্ডারথাল’রা কেমন আছে? তারা কেমন জীবন কাটাচ্ছে? আধুনিক মানুষ, ‘নিয়ান্ডারথাল’ ও ‘ডেনিসোভান’ উদ্ভূত হয়েছে একই পূর্বপুরুষ থেকে। ‘হোমো ইরেক্টাস’-এর যে মূল শাখাটি আফ্রিকাতে ছিল তাদের উত্তরসূরি হল ‘হোমো হাইডেলবার্গেনসিস’। ‘হোমো হাইডেলবার্গেনসিস’-রা পৃথিবীতে ছিল ৮ থেকে ৩ লক্ষ বছর আগে পর্যন্ত। থাকত পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউরোপ, চীন, জাপানে। ওরা আগুনের প্রারম্ভিক ব্যবহার জানত, হাতে থাকত কাঠের বল্লম। ‘হোমো হাইডেলবার্গেনসিস’ থেকে উদ্ভূত তিন জ্ঞাতি ভাই আধুনিক মানুষ, ‘নিয়ান্ডারথাল’ ও ‘ডেনিসোভান’।
হরপ্পা সভ্যতার সাধারণ পরিচিতি ব্রোঞ্জ যুগীয় সভ্যতা। এই পরিচিতির সূত্র ধরে আমরা ভাবতে পারি হরপ্পা সভ্যতায় ব্রোঞ্জ শিল্পের উন্নতি যথেষ্ট উন্নত পর্যায়ে গিয়েছিল। এবং হরপ্পান কারিগরেরা ব্রোঞ্জ শিল্পে দক্ষ হস্ত ছিলেন। আর ভাবা যেতে পেরে হরপ্পা সভ্যতার যুগে লোকের হাতে হাতে ছিল ব্রোঞ্জের নানা উপকরণ ও হাতিয়ার। হরপ্পা সভ্যতা থেকে পাওয়া ব্রোঞ্জের মূর্তি বা নানা উপকরণ সেই ধারনাকেই জোরদার করবে। তামা নিয়ে ভাবার অবকাশ নেই। সেই মেহেরগড় থেকেই তামার ব্যবহার চলছে। সোনা রূপারও ব্যবহারও হরপ্পা সভ্যতায় ছিলই। সব মিলিয়ে যে ছবি ফুটে ওঠে তা হরপ্পা সভ্যতার আমলের প্রচলিত সব ধাতুরই ব্যবহার হরপ্পা কারিগরদের জানা ছিল এবং ব্যবহারও হতো।