সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং স্থান

[২০২১ সাল নেতাজী সুভাষচন্দ্রের জন্মের ১২৫ তম বার্ষিকী। এই উপলক্ষ্যে বাংলা ও দেশজুড়ে তাঁকে নিয়ে নতুন করে চর্চার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। সুভাষচন্দ্র সম্পর্কে চর্চার সিংহভাগ জুড়ে রয়েছে তাঁর রহস্যময় অন্তর্ধান ও তাঁকে নিয়ে গড়ে ওঠা নানা মিথ ও রহস্য কাহিনী। আই. এন. এ. র বীরত্বপূর্ণ লড়াই বা মহানিষ্ক্রমণ নিয়ে কিছু চর্চার বাইরে তাঁর রাজনীতির বিভিন্ন পর্বকে ইতিহাসের পটে রেখে সামগ্রিক আলোচনা বেশ কম। কয়েকটি পরস্পর সম্পর্কিত লেখায় আমরা সেই চর্চার দিকে জোর দিতে চাই। বর্তমান নিবন্ধটিতে তার সূচনা। এখানে আলোচিত হয়েছে বিশ শতকের বিশের দশকে তরুণ সুভাষচন্দ্র যখন আই. সি. এস. এর চাকরী ছেড়ে দেশের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন, তখনকার রাজনৈতিক ইতিহাস। এই পর্বে সুভাষ দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের অনুগামী।]
১৮৯০-এর ২৮ নভেম্বর সাবিত্রীবাই ফুলে তাঁর বিগত পঞ্চাশ বছরের বন্ধু ও সহকর্মী, স্বামী ও শিক্ষক মহাত্মা জ্যোতিরাও ফুলের শেষযাত্রা ও শেষকৃত্যের লোকাচার নিজের হাতে সম্পন্ন করেন — নিজেই এগিয়ে এসে জলভরা ঘট হাতে শেষযাত্রায় সামনে থাকেন ও চিতায় আগুন দেওয়ার কাজ নিজ হাতেই করেন। ২০০৮ সালে ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং’ কর্তৃক প্রকাশিত পুস্তকে এই ঘটনাকে “ভারতের বিগত হাজার বছরের ইতিহাসে সম্ভবত এই প্রথম কোনও নারীর হস্তে শেষকৃত্যের লোকাচার সম্পন্ন হল” বলে বর্ণনা করা হয়েছে।১ ব্রাহ্মণ্যবাদী বিধানে শেষকৃত্যের অধিকার কেবলমাত্র পুরুষ উত্তরাধিকারীর ওপরই অর্পিত। সাবিত্রীবাই এই পিতৃতান্ত্রিক বিধান অমান্য করেছিলেন।
সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় একটি স্মৃতিচারণায় বলেছেন, লন্ডন থেকে কলকাতায় ফিরছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক। বিমানে ওঠার আগেই কি মনে হল, তিনি ফোন করলেন কলকাতায় এক ছাত্রকে। ফোনে বললেন, বিমানবন্দরে পৌঁছেই তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে চান। সেই বিমান পৌঁছনোর সময় বুঝে জনাকয়েক ছাত্র হাজির হলেন। ১৯৬৪ সালের জুলাই–আগস্ট মাসের কথা। কলকাতায় সেদিন ভ্যাপসা গরম। বিমান আসতে দেরি হল পাক্কা দুই ঘন্টা। প্রবীণ অধ্যাপক এলেন বিমানের ঠাণ্ডা আবহাওয়ায়, এলেন গুমোট কলকাতায়। জেনে নিলেন, ছাত্ররা এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে। সোজা গেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্রামের নামগন্ধও নিলেন না। ছাত্রদের শোনালেন লন্ডনে ২১ থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল জিওগ্রাফিকাল ইউনিয়নের (আইজিইউ) দ্বাদশ সম্মেলনের নানা অভিজ্ঞতা।