সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং স্থান

ভারতীয় চিন্তাধারায় মহাপুরুষ বা সাধকদের সংসার আশ্রমের সঙ্গিনী রা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাব্যে উপেক্ষিতা। এমনই এক নারী বুদ্ধপত্নী যশোধরা। মাতা মায়াদেবী(যিনি সিদ্ধার্থের জন্মের অনতিবিলম্বে মারা যান) ব্যতীত, একাধারে বুদ্ধের পারিবারিক ও ধর্মীয় জীবনের সাথে জড়িত দুই নারী হলেন তাঁর বিমাতা তথা পালিকামাতা গৌতমী ও পত্নী যশোধরা। এই দুজনের মধ্যে, অপেক্ষাকৃত কম উল্লেখিত আবার যশোধরা, অন্তত প্রাচীন পালি ধর্মীয় সাহিত্যে। কিন্তু সেই খ্রিঃ পূঃ ষষ্ঠ শতক থেকে, যত সময় এগিয়েছে, যশোধরা/গোপা/বিম্বা ততই জনপ্রিয় হয়েছেন, লৌকিক জীবনে। বিভিন্ন বৌদ্ধ সাহিত্যে তিনি যেমন চিত্রিত হয়েছেন পুণ্যবতী সাধিকা হিসাবে, তেমনি এক দুখিনী অথচ তেজস্বিনী নারী হিসাবেও। এই লেখার বিষয় ও উদ্দেশ্য, তাঁর সেই চিরন্তন মানবী সত্ত্বার অন্বেষণ।
সুরসিক সাহিত্যিক, সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত, অনুবাদক, বৈয়াকরণ রাজশেখর বসুর নাম আমরা শিক্ষিত বাঙালি মাত্রেই জানি। তাঁরই কনিষ্ঠতম সহোদর ভারতের প্রথম মনঃসমীক্ষক গিরীন্দ্রশেখর বসুর ক্ষেত্রে তা বলা যাবে না। গিরীন্দ্রশেখরও সংস্কৃত ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন। সাহিত্যকর্ম হিসেবে ছোটোদের জন্য লেখা তাঁর ‘লালকালো’ বইটিও কম উল্লেখযোগ্য নয়। কিন্তু তাঁর যে প্রধান কর্মক্ষেত্র ও গবেষণার বিষয় সেই মনঃসমীক্ষণ কখনই এদেশে খুব বেশি জনপ্রিয়তা পায়নি। সিগমুন্ড ফ্রয়েডের তত্ত্ব নিয়ে ইউরোপে যত হৈ চৈ হয়েছে, তার পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত রূপ নিয়ে বিদ্যাজগতের লোক এবং নারীবাদীরা যত আলোচনা করেছেন, আমাদের দেশে নানা কারণে ততটা গুরুত্ব পায়নি এই তত্ত্ব। কিন্তু গিরীন্দ্রশেখর এদেশে ফ্রয়েডের তত্ত্বকে সরাসরি প্রয়োগ করার চেষ্টা করেননি। তিনি মনঃসমীক্ষাকে গুরুত্ব দিলেও দেশজ পরিপ্রেক্ষিতটিকে মাথায় রেখে তার এক স্বাধীন, স্বতন্ত্র রূপ গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। সেটাই সবচেয়ে আগ্রহোদ্দীপক।