সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং স্থান

আদিগন্ত বিস্তৃত সিকিম হিমালয়ের দুর্গম দক্ষিণ কোলে ছোট্ট গ্রাম সাংমু। ১৯০২ সালের কোন এক ভোরে আচুং লেপচার বাড়িতে জন্ম নিলো এক কন্যা। একটু বড় হতেই আঙিনায় প্রাচীন পিয়ার গাছটির আশপাশে খেলে বেড়ায় সে। ফুটফুটে শিশুটির নাম রাখা হয়েছে হেলেন। আচুং তাঁর সাত সন্তানকেই আধুনিক ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চেয়েছিলেন। তাই গ্রাম ছেড়ে সপরিবারে উন্নততর জীবনের খোঁজে তিনি বাসা বাঁধলেন দার্জিলিংয়ের কার্শিয়াং শহরে। হেলেন তখন বেশ ছোট্ট। শহরের স্কটস্‌ মিশনারি স্কুলের প্রাথমিক বিভাগে ভর্তি করা হলো হেলেনকে। কিন্তু স্কুলের গণ্ডিবদ্ধ পঠন-পাঠন আর কঠোর শৃঙ্খলা মোটেই ভালো লাগতো না শিশুটির। তাই কষ্টেসৃষ্টে কয়েক বছর পড়ে মাত্র ১৪ বছর বয়সে বাড়ির প্রবল অমত সত্ত্বেও বিলাতি স্কুল ছেড়ে দিল হেলেন।
আজ থেকে বছর দশেক আগে যখন ফেলুদা কাহিনীর শেষ উপন্যাস 'রবার্টসনের রুবি' পড়ি, তখন সত্যজিৎ রায়ের লেখার মাধ্যমে ডেভিড ম্যাককাচন সাহেবের কথা প্রথম জানতে পারি। তারপর দীর্ঘদিন পর বিদ্যাসাগর কলেজে আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক অধ্যাপক শেখর ভৌমিক স্যারের একটি লেখায় ডেভিড ম্যাককাচনের উল্লেখ দেখে তাঁর প্রতি গভীর আগ্রহ তৈরি হয়। স্যারের সেই লেখাটি পড়ার পর বহুদিন কেটে গেছে, সেই সাথে আমার ডেভিড ম্যাককাচন চর্চার আগ্রহ বেড়েই চলেছে। টেরাকোটাপ্রাণ এই বিলিতি সাহেব মানুষটিকে জানার যেন কোনো শেষ নেই। তাঁর সম্পর্কে পড়তে গিয়ে দেখতে পাই তিনি ও বাংলার মন্দির টেরাকোটা যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছেন।