জীবনে প্রথম রেলগাড়ি দেখার অভিজ্ঞতা এইভাবেই তাঁর সুনিপুন অক্ষরের নকশায় ফুটিয়ে তুলেছিলেন রাস্কিন বন্ড। সেই বয়সেই তাঁর দেখার চোখ ছিল। পরিতাপের বিষয়, এই ঈশ্বরপ্রদত্ত দৃষ্টি, বর্তমান লেখকের কস্মিনকালেও ছিল না। তবুও এইটুকু মনে আছে, ছোটবেলায় পুজোর সময় ভোরবেলার আকাশ যখন আস্তে আস্তে গোলাপী হয়ে উঠত, তখন হ্যামলিনে বাঁশির মতো রেলগাড়ির হর্নের মায়াবী সুরের টানে বাবা মা-এর হাত ধরে দাঁড়াতাম শেয়ালদার কোনও প্ল্যাটফর্মে। আরব্য রজনী থেকে উঠে আসা এক আশ্চর্য যান প্রবল বেগে ছুটে চলত গন্তব্যের দিকে। জানলা দিয়ে অবাক হয়ে দেখতাম গাছ, বাড়ি, পুকুর, মানুষ, ধানক্ষেত – সবেরই পেছন দিকে দৌড়। আর যখন জুবিলি সেতু আসত, রেলগাড়ি তার উর্ধ্বশ্বাস দৌড় থামিয়ে, ধীর শ্বাস ফেলতে ফেলতে, সকালের সোনাগলানো রোদে চিকচিক করতে থাকা গঙ্গা পার হতো, তখন রাস্কিনের মতোই, পুরো ব্যাপারটাই মনে হতো রূপকথার বইয়ের পাতা থেকে উঠে আসা।