সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

অর্থনৈতিক ইতিহাস

১৯২০ সালে রাশিয়ার বলশেভিকরা তিন বছরের রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের পর শ্বেতরক্ষীদের নির্ণায়কভাবে পরাস্ত করতে সক্ষম হলেও দেশের অর্থনীতি ও পরিকাঠামো ভেঙে চুরে যায়। রাশিয়ার পুনর্গঠনের লক্ষ্যে সমাজতান্ত্রিক আদর্শ থেকে খানিকটা পেছনে সরে এসে নেওয়া হয় নয়া আর্থিক নীতি বা নেপ। এতে গ্রামাঞ্চলে ধনী কৃষক ও কুলাকদের অনেকটা ছাড় দেওয়া হয়, যাতে রাশিয়ায় কৃষি উৎপাদন বাড়ে এবং সেনাবাহিনী ও শহরে পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ বরাদ্দ থাকে। ভারী শিল্প ও কলকারখানা এরপরেও বেশ কয়েক বছর বেশ সঙ্কটগ্রস্থ অবস্থায় থাকলেও কৃষি উৎপাদন ক্রমশ বাড়তে থাকে। ১৯২৪ এ লেনিনের মৃত্যুর পর রাশিয়ায় শুরু হয় নেপ নিয়ে এক মহাবিতর্ক।
একটা পুরো মহাসাগরের নাম আমাদের দেশের নামে হয়ে গেছে। পৃথিবীতে যুগে যুগে বহু ক্ষমতাধরেরা এসেছেন, সেসব দেশের পাশেও মহাসাগর আছে, কিন্তু তবু অন্য কোনো দেশ এই সৌভাগ্যের অধিকারী হয়নি, তাদের নামে একটা মহাসাগরের নাম হয়নি। ভারতের সঙ্গে এই মহাসাগর, তার নিকটবর্তী অন্যান্য সাগরগুলির সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। অতি প্রাচীন যুগ থেকে, প্রথমে পশ্চিম ও পরে পূর্ব উপকূল ধরে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এই উপমহাদেশের মানুষ সমুদ্রপথে বাণিজ্য করেছে। সেই ইতিহাস আজ হারিয়ে গেছে। ভারতবর্ষের মানুষের সেই গৌরবের কথা, সম্পদের স্মৃতিও আর নেই। তবে সেই ইতিহাস তার প্রতি বিদেশি বণিকের আকর্ষণ গড়ে তুলেছিল। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ইতিহাসে সেই বাণিজ্য ও তার সঙ্গে সাংস্কৃতিক দেনাপাওনার স্মৃতি রয়ে গেছে।
কড়ি এক ধরণের মৃত সামুদ্রিক শামুকের (বৈজ্ঞানিক নাম: সাইপ্রিয়া মনেটা) খোল, যা মূলত ভারত মহাসাগরে পাওয়া যায়। এশিয়া ও আফ্রিকার বহু দেশে মধ্যযুগে কড়ি বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হত। সাধারণাব্দের ষোড়শ থেকে ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত ইউরোপ এবং আফ্রিকার মধ্যে যে দাস ব্যবসা চলত, তার একটা বড় অংশ হত কড়ির মাধ্যমে। প্রায় দুই সহস্রাব্দ ধরে কড়ি বাংলায় বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। অথচ, বাংলা বা তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে কড়ি পাওয়া যায় না, মালদ্বীপ থেকে ভারত মহাসাগরের সমুদ্রপথে কড়ি বাংলায় আমদানি করা হত। চতুর্দশ শতকের মরক্কোর পর্যটক ইবন বতুতা মালদ্বীপ ভ্রমণের সময় দেখেছেন, মালদ্বীপের অধিবাসীরা কড়ির বিনিময়ে বাংলা থেকে আমদানি করা চাল কিনতেন। ষোড়শ শতকের শেষদিক থেকে পর্তুগিজ বণিকরা ভারত মহাসাগরে বাণিজ্যের উপর নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করার পর মুখ্যত পর্তুগিজরাই বাংলায় কড়ি আমদানি করত।