সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

বাংলার ইতিহাস

অন্ত মধ্যযুগ থেকে যে ভূভাগ বাঙ্গালা বা বাংলা নামে পরিচিত, আদি মধ্যযুগ থেকেই সেই ভূখণ্ডের ভৌগোলিক অঞ্চলগুলির ক্রমশ একটি রাজ্যতন্ত্রের অধীনে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। সাধারণাব্দের ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শতকের মধ্যবর্তী কোনও সময় রচিত আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্প গ্রন্থে (৫৩.৬৮৭) উল্লিখিত ‘গৌড়তন্ত্র’১ সম্ভবত এই পরিবর্তনের ইঙ্গিতবাহী। আদি মধ্যযুগে বাংলা বেশ কয়েকবার বহিঃশত্রুর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাধারণাব্দের অষ্টম শতকে কাশ্মীরের শাসক ললিতাদিত্য মুক্তাপীড় এবং একাদশ শতকে তামিল ভূমির শাসক রাজেন্দ্র চোলের সেনার আক্রমণে। আশ্চর্যজনকভাবে বাংলার অভ্যন্তরীণ কোনও উত্স থেকে আদি মধ্যযুগের এই দুই বহিঃশত্রুর আক্রমণ ও আক্রমণের ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে প্রায় কোনও তথ্যই পাওয়া যায়নি।
মানব সভ্যতা এগিয়েছে মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে।টিকে থাকার এ পর্বে মানুষ তার বিজয়গাথাকে লিখে রাখতে পারেনি। হয়তো তখন তাদের মস্তিষ্কে এই বোধ-ই জন্মায় নি।হাজার বছরের তীব্র লড়াই আর সংগ্রামের ভিতর দিয়ে মানুষ যখন গুহাগাত্রে ছবির মাধ্যমে তার অনুভূতি প্রকাশ করতে থাকে তখন থেকেই মানুষের ইতিহাস শুরু হয়।প্রাগিতিহাস।এই সময় থেকে মানুষ অন্যান্য প্রাণী থেকে আলাদা হতে শুরু করে। এভাবেই ইতিহাসের যাত্রা শুরু বলে পণ্ডিতরা মনে করেন। তারপর আগুন জ্বালিয়ে গাছের গুঁড়িতে বসে দাদুর মুখে গল্প শুনে শুনে ইতিহাসের একটি মৌখিক রূপ দাঁড়ায়। ইশারা-ইঙ্গিত এবং গুহাগাত্রে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। বঙ্গোপসাগরীয় এলাকায় বসবাসকারী নৃগোষ্ঠীথেকেহিন্দু মুসলিম, বড়ুয়া, মগ-রাখাইন–পৃথিবীর সব নরগোষ্ঠীর আদি যাত্রাপথ এভাবেই শুরু হয়েছে।