বাংলার ধর্মচক্র
বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গিবাড়ী উপজেলার নাটেশ্বর দেউলে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন চালিয়ে আটটি স্পোকযুক্ত ধর্মচক্র আবিষ্কৃত হয়েছে। এ পর্যন্ত নাটেশ্বরে পঞ্চমবারের মতো অষ্টকোণাকৃতির বৌদ্ধস্তূপ পাওয়া গেছে। এখানে আরও তিনটি স্তূপ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০১৩ -১৪ সাল থেকে এখানে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্য শুরু হয়। এবারের উৎখননে এর আদি পর্যায়ের অনেক অংশ পাওয়া যাওয়াই এই আবিষ্কারকে প্রত্নতাত্ত্বিকরা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন।
এবারে আট স্পোকযুক্ত ধর্মচক্র পাওয়া গেছে। এই ধর্মচক্রকে সূর্যের সঙ্গে তুলনা করা হয়। ধর্মচক্রে বৌদ্ধদর্শনের অষ্টাঙ্গিক মার্গ – সৎদৃষ্টি, সৎসংকল্প, সৎবাক্য, সৎকর্ম, সৎজীবিকা, সৎচিন্তা, সৎ চেতনা ও সৎ ধ্যান প্রতীকী রূপে প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আবিষ্কার সম্পূর্ণ হলে এই প্রত্নস্থল ও প্রাপ্ত প্রত্নবস্তুগুলো যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করা হবে। নাটেশ্বর দেউলের খননকার্য বেশ ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ। এ কাজে আরও অভিজ্ঞ লোকবলের প্রয়োজন। খনন শেষ হতে আরও কয়েক বছর সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন ও ঐতিহ্য অন্বেষণ গবেষণার উৎখননের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম এই বৌদ্ধধর্মচক্র আবিষ্কৃত হলো। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও খ্যাতিমান প্রত্নতাত্ত্বিক অধ্যাপক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান এর মতে, ১ হাজার ১০০ বছর আগে বিক্রমপুরে বৌদ্ধধর্ম ও দর্শনের একটি অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী চিন্তাধারা বিকাশ লাভ করেছিল। প্রসঙ্গত, এই বিক্রমপুর (বর্তমান মুন্সিগঞ্জ) পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানের জন্মভূমি। তাঁর জন্মভূমিতে অষ্টকোণাকৃতির স্তূপাবশেষ আবিষ্কার বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
‘১১০০ বছর আগের স্থাপনার সন্ধান’ – শিরোনামে এই প্রতিবেদনটি আজ বাংলাদেশের একটি জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়েছে। মূল প্রতিবেদনটির লিংক নিচে দেয়া হলো –
— দীপরাজ দাশগুপ্ত
https://www.facebook.com/163059227060505/posts/5780115752021463/