সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

লেখক: শান্তনু ভৌমিক

লেখক মুম্বাইতে স্বনিযুক্ত। কারিগরিবিদ্যায় স্নাতক এবং ফিনান্স-এ এম.বি.এ। পেশার বাইরে শখ হলো নতুন জায়গা ঘুরে দেখা, ইতিহাস চর্চা করা এবং মাঝে-মধ্যে ঘরোয়া বাঙ্গালী রান্না করা। ফুটবলপ্রেমী এবং কট্টর মোহনবাগান সমর্থক।
"উস তরফ মত যাইয়ে, উধার সব বন্ধ হ্যায়"। গন্তব্যস্থলে যখন পৌঁছলাম তখন বিকেল ৫'টা বাজতে আর মিনিট দশ-পনেরো বাকি ছিল। আর যা দেখার জন্য আসা, তার ঝাঁপ পড়ে যাওয়ার কথা বিকেল ৫'টায়। অতএব, হাতে সময় ছিল না বললেই চলে। পার্কিং লটে গাড়ি পার্ক করতে করতেই দেখে নিয়েছিলাম যে পুরো জায়গাটা পাঁচিল দিয়ে ঘেরা আর আকৃতিতে তা হল ইংরেজি বর্ণমালার 'এল' অক্ষরের মত। গাড়ি থেকে নেমে খেয়াল করলাম যে যে সেই 'এল'এর একটা বাহুতে লোকজন না থাকলেও, আর এক বাহুতে বেশ কয়েকজন ঘোরাঘুরি করছে। কপাল ঠুকে সেদিকেই দিলাম হাঁটা যদি শেষ ৫-১০ মিনিটে কিছু দেখা যায় এই আশা নিয়ে। তখনই পিছন থেকে ভেসে এল অযাচিত উপদেশবাণী - "উস তরফ মত যাইয়ে, উধার সব বন্ধ হ্যায়"।
ভারতের ইতিহাসচর্চায় মৌর্য সাম্রাজ্যের এবং গুপ্ত সাম্রাজ্যের মধ্যবর্তী সময়ের ভারত অপেক্ষাকৃত অবহেলিত। অথচ সেই সময়কার অর্থাৎ সাধারণ পূর্বাব্দের দ্বিতীয় শতকের প্রথম ভাগ থেকে সাধারণ অব্দের তৃতীয় শতকের অন্তিম ভাগের মধ্যবর্তী সময়ের ভারতের ইতিহাস একটু খুঁটিয়ে দেখলে বোঝা যায় যে সেই সময় ভারতের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিমণ্ডলে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল যার প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। সেই সময়েই তদানীন্তন ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে মধ্য এশিয়া থেকে আসে একের পর এক জাতিগোষ্ঠী; দাক্ষিণাত্যে উত্থান হয় প্রথম দক্ষিণ ভারত কেন্দ্রিক রাজশক্তির; শিল্প, ব্যবসা ও বাণিজ্যে ঘটে প্রভূত বিকাশ; মুদ্রা হয়ে ওঠে অর্থনৈতিক লেনদেনের প্রধান ভিত্তি; প্রাচীন ভারতের নগরায়ণ প্রক্রিয়া লাভ করে সর্বোচ্চ গতিবেগ।