সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

লেখক: মধুশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়

মধুশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়
লেখিকা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনীয়ারিং বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপিকা, পরবর্তীতে তথ্য ও প্রযুক্তি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ইতিহাসের তন্নিষ্ঠ ছাত্রী। প্রাবন্ধিক। তাঁর গ্রন্থ 'প্রাগিতিহাস - ভারতবর্ষে পরিযান ও জাতিগোষ্ঠী গঠন' মুজাফ্ফর আহমদ স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ওনার লেখা দ্বিতীয় গ্রন্থ 'ধর্ম সংস্কৃতি ও রাজনীতি - ছিন্ন চিন্তার ককটেল'।
ভারতে একসময়ে নাস্তিক্যবাদ চর্চা করা হয়েছে, তখন যুক্তিবাদ ক্রমাগত বিকশিত হয়েছে। সেই সময়ে এই দেশে এই নাস্তিক সম্প্রদায়গুলি শক্তিশালী ছিল। ২০১২ সালে ডিসেম্বর মাসে পিউ রিসার্চ সেন্টার বিশ্বব্যাপী ২৩০টি দেশে গবেষণা করে কিছু তথ্য প্রকাশ করে। ওই মুহূর্তে সারা পৃথিবীতে প্রায় ১৬.৩% মানুষ কোন প্রচলিত ধর্মে আস্থা রাখেননি। এদের মধ্যে আছেন সেকুলার হিউম্যানিস্ট। এরা মনে করেন কোন ধরণের ঈশ্বরের সহায়তা ছাড়াই মানুষ নিজে ন্যায়পরায়ণ থাকতে পারে। আছেন ফ্রি থিঙ্কার, এরা সবরকম ধর্মমতকে ত্যাগ করেছেন। আছেন স্পিরিচুয়াল-রা। এরা সংগঠিত ধর্মে আস্থা রাখেন না তবে আধ্যাত্মিক উন্নতির পক্ষে। আর আছেন ধর্ম বিরোধীরা, এরা মনে করেন মানুষের ভালো থাকার জন্য কোন ধর্মের প্রয়োজন নেই।
শেষ কুড়ি বছরে জীববিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা আধুনিক মানুষের বিবর্তন ও প্রব্রজন নিয়ে বহু নতুন তথ্য দিয়ে সামগ্রিকভাবে প্রাগিতিহাস ও ইতিহাস রচনায় অভূতপূর্ব দিকনির্দেশ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘জিনবিদ্যা’ বা জেনেটিক্স। জিনবিদ্যাভিত্তিক গবেষণা ইতিহাস লেখাতে এনেছে যুগান্তর। জিনবিদ্যার সাহায্যে আমাদের দেহের ডিএনএ বিশ্লেষণ করে প্রমাণ করা যায়, সত্তর হাজার বছর আগে একবার আধুনিক মানুষ প্রচন্ড ঠাণ্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়ায় বেরিয়ে পড়েছিল পূর্ব আফ্রিকা থেকে। ওই পরিযানের ফলে আধুনিক মানুষের যে দল আফ্রিকার বাইরে এসেছিল, আজকে আফ্রিকার বাইরে পৃথিবীর সমস্ত মানুষ তাদেরই উত্তরসূরী (চিত্র ১)।