সূচী

ইতিহাস তথ্য ও তর্ক

লেখক: কাবেরী চ্যাটার্জী রায়

কাবেরী চ্যাটার্জী রায়
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর। বর্তমানে কলকাতা বন্দরে কর্মরত। ভালোবাসেন ইতিহাস, কবিতা এবং চা। এছাড়াও নিয়মিত গল্প-টী-খাসা নামে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এক কাপ চায়ের সঙ্গে, বাংলা গল্প পাঠ করে শোনান।
অফিসবাড়িটা সমুদ্রের ধারে। সেই বাড়ির মাথায় লাগানো হাওয়া মোরগের দিকে গত কয়েকদিন ধরেই কড়া নজর সবার। পৃথিবীর তিন চতুর্থাংশ ঘুরে , প্রায় ষোলো হাজার মাইল পেরিয়ে ,সুদূর প্রাচ্যের চীন দেশের ফুচাও বা ক্যান্টন বন্দর থেকে দুষ্প্রাপ্য সুগন্ধি চা-বাহী জাহাজগুলো কবে নাগাদ বন্দরে ঢুকবে তার ইঙ্গিত দেবে ওই হাওয়া মোরগ। সে নট নড়ন চড়ন হয়ে গম্ভীর হয়ে থাকলেই লন্ডন শহরের জাহাজ মালিক থেকে চায়ের দোকানী, জাহাজীবাবু থেকে চায়ের দালাল; সবার মুখ গম্ভীর, ভুরুতে ভাঁজ… হাওয়া তার মানে পড়তি। কিন্তু মোরগের মুখ যদি তিরতির করে ঘুরে যায় দক্ষিণ পশ্চিমে? তাহলে হাহাকার! সমুদ্দুর পেরিয়ে ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে চা নিয়ে জাহাজগুলোর পৌঁছনো তার মানে পিছিয়ে গেল আবার! কি যে হবে! দুষ্প্রাপ্য এই পাতাগুলোর স্বাদ-গন্ধ-গুণ-মান ঠিক থাকবে তো?
পেনি ইউনিভার্সিটি— নামটা কানে বেশ একটু অদ্ভুত শোনাচ্ছে বটে, কিন্তু অক্সফোর্ড শহরের কফির দোকানগুলোকে তখন এই নামেই ডাকে সেখানকার মানুষ। শব্দটা সপ্তদশ শতাব্দীর। সময়টা আন্দাজ ১৬৫০। অক্সফোর্ড শহরের রাস্তার ধারে খোলা হয়েছে ইংল্যান্ডের প্রথম কফিহাউস। মাত্র এক পেনির বিনিময়ে সেখানে মেলে ফায়ার প্লেসের ধারে সুগন্ধি গরম কফি, বিদগ্ধ আলোচনা আর জ্ঞানী-গুণী মানুষজনের সান্নিধ্য। অক্সফোর্ডের ছাত্র বা শিক্ষক না হয়েও সেখানকার জ্ঞানী-গুনী মানুষের সঙ্গে সমানে সমানে কথাবার্তা, আলোচনা, তর্ক বিতর্কের সুযোগ। সঙ্গে? কফি। পৃথিবীর অন্য প্রান্ত থেকে আসা চনমনে সুগন্ধি এক নতুন পানীয় যা মানুষের শরীর মন দুইই চাঙ্গা করে দেয়।