অধোলোক মহাচৈত্য- এক হারিয়ে যাওয়া বৌদ্ধ ঐতিহ্যের পুনরুদ্ধার
কর্ণাটকের ভীমা নদীর তীরে কলবুর্গি (গুলবর্গা) জেলায় সন্নতি গ্ৰামে চন্দ্রলাম্বা পরমেশ্বরী মন্দির কমপ্লেক্স। বহু পুরোনো অনেকগুলো দেবী মন্দিরের সমষ্টি। এদের মধ্যেই ছিল এক কালী মন্দির। ১৯৮৬ সালে তার ছাদ ভেঙে পড়ে। মেঝে ফেটে যায়। ভাঙাচোরা অবশেষ পরিষ্কার করতে করতে বেরিয়ে আসে কিছু শিলালেখ- সম্রাট অশোকের। দেখা যায় কালীমূর্তির বেদীটি ছিল আসলে অশোকের শিলালেখ। এখান থেকে প্রত্নতত্ত্ববিদরা আভাস পান এই মন্দিরের আশেপাশে ঐযুগের আরো বৌদ্ধ পুরাবস্তু থাকার। আরো খোঁড়াখুঁড়ির পর আরো প্রত্নসম্পদ পাওয়া যায়, এবং ইঙ্গিত পাওয়া যায় কাছেই কোনো বড়মাপের বৌদ্ধ স্তূপের অবশেষ আছে।
এর আগে কর্ণাটকে বৌদ্ধ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বলতে জানা ছিল মাস্কিতে প্রাপ্ত অশোকের কিছু লঘু শিলালেখ, বনবাসীতে পাওয়া কিছু প্রত্নবস্তু, দম্বলের তারা মন্দিরের অবশেষ, আইহোলের একটি ছোট্ট মন্দির, বাদামির একটি রহস্যময় গুহা- এইই। অর্থাৎ বড় কোনো স্তূপ, বিহার, গুহা স্থাপত্য বা মন্দিরের কথা জানা ছিল না। সন্নতির আশেপাশে খুঁড়তে খুঁড়তেই শেষে পাওয়া গেল স্তূপ- প্রথম সাধারণ পূর্ব শতাব্দীর। কোনো ছোটখাটো স্তূপ নয়- মহাস্তূপ বলতে যা বোঝায় সেইরকম স্তূপের অবশেষ। অথচ এত বড় একটা স্থাপত্যের কথা ১৯৮৬র আগে কেউ জানতোই না! স্তূপটির নামও পাওয়া গেল- “অধোলোক মহাচৈত্য”। অধোলোক মানে পাতাল।
চন্দ্রলাম্বা পরমেশ্বরী মন্দির কমপ্লেক্স নিজেই বেশ পুরোনো। অনেক পৌরাণিক কাহিনী জড়িয়ে আছে এই মন্দিরের সাথে। যদিও এই মন্দিরসমূহের বেশিরভাগই গত কয়েকশো বছরে তৈরি কিন্তু এটি মূলগতভাবে রাষ্ট্রকূট যুগের অর্থাৎ অষ্টম শতকের। উল্লিখিত কালী (মূলতঃ চামুণ্ডা) মন্দিরটির গর্ভগৃহ হল রাষ্ট্রকূট যুগের। যাইহোক, নূতন স্থাপত্য বানানোর জন্য পুরোনো স্থাপত্যের বা তার পাথরের রিপার্পাসিঙ বা পুনঃপ্রয়োগ কোনো নূতন ব্যাপার নয় ভারতের ইতিহাসে। শিলালেখটিকে আনুভূমিক ভাবে শুইয়ে তাতে একটি চৌকো গর্ত করে চামুণ্ডার মূর্তি বসানো হয়েছিল। যখন করা হয়েছিল তখন অশোকের উপদেশাবলীর গুরুত্ব কমে এসেছে। স্বাভাবিক ভাবেই ঐ গর্তের জায়গায় যে লেখটি ছিল সেটি হারিয়ে যায়।
অশোকের শিলালেখ যার মধ্যে গর্ত করে চামুণ্ডা মূর্তির বেদী নির্মিত হয়েছিল।
স্তূপটির অবশেষ পাওয়া গেছে কনগনহল্লি গ্ৰামে, ভীমা নদীর তীরেই, চন্দ্রলাম্বা পরমেশ্বরী মন্দির থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে। ভীমা হল কৃষ্ণার উপনদী। ভীমা-কৃষ্ণা নদী অববাহিকায় অনেকগুলি বড় স্তূপ বা চৈত্য বা বিহার গড়ে উঠেছিল যাদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হল- অন্ধ্রপ্রদেশের অমরাবতী, নাগার্জুনকোণ্ডা, জগইয়াপেট, ভট্টিপ্রোলু, চন্দ্রবরম, গুন্টুপল্লী আর অবশ্যই কর্ণাটকের কনগনহল্লি। সম্ভবতঃ কৃষ্ণা নদীর বাণিজ্যিক গুরুত্ব আর সাতবাহনদের পৃষ্ঠপোষকতা এর একটা বড় কারণ।
নদীমাতৃক ভারতবর্ষের অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলির মধ্যে চিরকালই বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে গোদাবরী আর কৃষ্ণা। পশ্চিমঘাটে এদের শুরু, বঙ্গোপসাগরে এদের সমাপ্তি। মহারাষ্ট্র, তেলঙ্গানা, অন্ধ্র এই তিনটি রাজ্যকে এরা সমৃদ্ধ করে রেখেছে। এছাড়া কৃষ্ণা আছে কর্ণাটকেও। এই দুটি নদীর উৎসমুখ থেকে মোহনা অবধি পুরো অঞ্চল জুড়ে একসময়ে রাজত্ব করেছিল সাতবাহন রাজবংশ, প্রায় চার শতাব্দী জুড়ে। সাতবাহন সাম্রাজ্যের উত্তর পশ্চিম প্রান্তে ছিল সোপারা, চাউল, কল্যাণ ও ভারুচের মত কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রবন্দর। আর দক্ষিণপূর্ব প্রান্তে ছিল কৃষ্ণা গোদাবরীর ব-দ্বীপ যাকে দাক্ষিণাত্যের শস্যভাণ্ড বলা হয়। পুরো সাম্রাজ্য জুড়েই ছিল বাণিজ্যপথ। যে সে বাণিজ্য নয়, সাতবাহন বাণিজ্যিক রপ্তানির ক্রেতা ছিল রোমানরা। বৃহত্তর রোমান বাণিজ্যপথ যা শুরু হত দূর ভূমধ্যসাগর থেকে , সেই পথের উপরেই ছিল সাতবাহন রাজ্যের বন্দরগুলো। বিশেষ উল্লেখযোগ্য বন্দর ছিল সোপারা যা মুম্বই শহর থেকে কিছুটা উত্তরে, পুরোনো সাহিত্যে যার নাম ছিল শূর্পারক বা সুপ্পরক বা ওফির (হিব্রু সাহিত্যে – অনুমিত)। সোপারাতে পাওয়া গেছে অশোকের দুটি গুরু শিলালেখ, একটি বৌদ্ধ স্তূপ ও অনেক বৌদ্ধ প্রত্নসম্পদ। সোপারা থেকে একটু দক্ষিণে গেলেই মুম্বাই যেখানে আছে দু’হাজার বছর পুরোনো কানহেরি বৌদ্ধ গুহাসমূহ, এবং মুম্বাইএর আশেপাশে আরো অজস্র দু’হাজার বছর পুরোনো বৌদ্ধ গুহাবিহার সমূহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
রোমান সাম্রাজ্যের সঙ্গে বহির্বাণিজ্য অনেকটাই বণিকদের সাহায্য করেছিল সামাজিকভাবে প্রভাবশালী হয়ে উঠতে, এবং রপ্তানিজাত অর্থের অনেকটাই তারা দান বা বিনিয়োগ করত বৌদ্ধ বিহারে। বাণিজ্যের সাথে, বাণিজ্যপথগুলির সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে যুক্ত ছিল বৌদ্ধ ধর্ম। বৌদ্ধ বিহারগুলিতে আবিষ্কৃত দাতার তালিকাগুলি দেখলে বোঝা যায় দাতারা বেশীরভাগই কোনো না কোনো সাতবাহন সাম্রাজ্যভুক্ত বাণিজ্যকেন্দ্রে বসবাসকারী বণিক ছিল।
সাতবাহন রাজারা মূলতঃ ব্রাহ্মণ্যধর্মী ছিলেন। নানেঘাট গুহার শিলালেখগুলি তৈরি করিয়েছিলেন সাতবাহন রাজা সাতকর্ণীর বিধবা পত্নী নয়নিকা। সেখানেই আমরা বিভিন্ন হিন্দু দেবদেবীর প্রাচীনতম কিছু খোদিত নামোল্লেখের দেখা পাই- ধর্ম, ইন্দ্র, সংকর্ষণ, বাসুদেব, চন্দ্র, লোকপাল, যম, বরুণ, কুবের, বাসব ইত্যাদি।
সাঁচী স্তূপের সবচেয়ে সুন্দর অংশগুলি অর্থাৎ তোরণগুলি যা নিঃসন্দেহে প্রাচীন ভারতীয় ভাস্কর্যের সূক্ষ্মতম নিদর্শনগুলির মধ্যে পড়ে, তৈরি হয়েছিল সাতবাহন যুগেই, রাজা দ্বিতীয় সাতকর্ণীর পৃষ্ঠপোষকতায়। ব্রাহ্মণ্যধর্মী বৈষ্ণব হলেও সাতবাহনরা বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা দিতেন তার উদাহরণ ছিল কর্ণাটকের সন্নতি, সাঁচীর চারটি তোরণ, নাসিকের ত্রিরশ্মি ও পাণ্ডবলেনী গুহাসমূহ, অজন্তার নয় ও দশ নম্বর গুহা, ভজা গুহা, কার্লা গুহার কিছু অংশ, তেলঙ্গানার ফণীগিরি বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশের নাগার্জুনকোণ্ডা ও অমরাবতী।
আবার অনেক পুরাকীর্তিতে রাজা নয়, বণিকদের পৃষ্ঠপোষকতা ছিল। সবমিলিয়ে বলা যায় রোমান রপ্তানিজাত অর্থ ভারতকে অনেকটাই শিল্পসমৃদ্ধ করে তুলেছিল।
কনগনহল্লি স্তূপের প্রাচীনতম অংশ অশোকের তৈরি হতে পারে, কিন্তু এর বেশিরভাগ ভাস্কর্যই সাতবাহন যুগের। স্তূপটিকে কোথাও কনগনহল্লি স্তূপ বলা হয়, কোথাও সন্নতি স্তূপ। দুটি একই। এখানকার কিছু উল্লেখযোগ্য পুরাবস্তু ছিল:
১) অশোকের নামাঙ্কিত ভাস্কর্য: অশোকের সপরিবার ভাস্কর্য এখানে পাওয়া যায়। নিচে লেখা “রায়ো অশোকো”। রায় মানে রাজা। পৃথিবীতে আর কোথাও এরকম অশোকের নামাঙ্কিত ভাস্কর্য পাওয়া যায়নি। এটি অশোকের মৃত্যুর এক দুই শতাব্দী পরে বানানো। এটিকে রেফার করে সাঁচীর নামহীন অশোকের ভাস্কর্যকেও অশোক বলে চিহ্নিত করা গেছে।
২) মহাবোধি মন্দিরের রেপ্লিকা: মহাবোধি মন্দিরের বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন রেপ্লিকা নিয়ে এই পোর্টালে আগে বিশদ আলোচনা আছে একই লেখকের। গয়ার মহাবোধি মন্দির বুদ্ধের নির্বাণলাভের স্থানে নির্মিত, একটি পিপুল গাছকে ঘিরে। এখনকার মহাবোধি মন্দিরের পিরামিড আকারের শিখর গুপ্তযুগের। তার আগে আনুমানিক দ্বিতীয় শতকেও অনুমিত যে পিরামিড আকারের শিখর ছিল। কিন্তু তারও আগে গোল আকারের শিখর ছিল। কীভাবে জানা যায়? কলকাতায়ই উত্তর আছে। কলকাতায় ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামে আছে ভরহুতের বৌদ্ধ স্তূপের অবশেষ। ভরহুতের দেয়ালগুলো সুন্দরভাবে রাখা আছে। একটি দেয়ালে মহাবোধি মন্দিরের প্রতিকৃতি। কীভাবে বোঝা যায় এটি মহাবোধি? পিপুল গাছ মন্দিরের মাথা ফুঁড়ে বেরিয়ে এসেছে, আর আছে বজ্রাসন। এটিই মহাবোধি মন্দিরের বৈশিষ্ট্য। কীভাবে বোঝা গেল এটি গোল ছিল? কার্ভিলিনিয়ার পার্সপেক্টিভ ব্যবহার করে এটির গোল আকার দেখানো হয়েছে। এটি মহাবোধি মন্দিরের ভেতরের রূপ যা ভরহুতের দেয়ালে খোদাই করা রয়েছে।
তাহলে মহাবোধি মন্দিরের বাইরের রূপ কেমন ছিল? উত্তর আছে কনগনহল্লির স্তূপে! এখানেও একটি মহাবোধির প্রতিকৃতি পাওয়া গেছে। কীভাবে বোঝা যায় এটি মহাবোধি? একই উত্তর- পিপুল গাছ মন্দিরের মাথা ফুঁড়ে বেরিয়ে এসেছে, আর আছে বজ্রাসন। এখানে কিন্তু মন্দিরের বাইরের রূপটা দেখা যায়। একই মন্দির- তার ভিতর আর বাইরের রূপ দুই জায়গায় খোদিত। একটা যেন অন্যটার পরিপূরক।
আবার কার্ভিলিনিয়ার পার্সপেক্টিভটা ভেতর এবং বাইরের জন্য দুরকমভাবে করা হয়েছে- এর ফলে মন্দিরের ভেতর আর বাইরেটা আলাদা করে বোঝা যায়।
পঞ্চম শতকের আগের কোনো ভারতীয় ফ্রী স্ট্যান্ডিঙ (অর্থাৎ গুহা বাদ দিলে) মন্দিরের চেহারা দেখার কোনো সুযোগ যদি আমাদের কাছে থাকে, তা হল এইই একমাত্র!
৩) বুদ্ধের দেহাস্থি বন্টন ও পরিবহনের দৃশ্য।
৪) বিভিন্ন সাতবাহন রাজার (চিমূক ও সাতকর্ণী) ভাস্কর্য। সাতবাহনরা হিন্দু হলেও বৌদ্ধ ধর্মের এবং এই স্তূপকে ঘিরে তৈরি বিহারগুলির বিশেষ পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।
৫) নাগ পরিবেষ্টিত স্তূপের দৃশ্য।
৬) ধর্মচক্র সহ বজ্রাসন ও আসনের নীচে বুদ্ধের পা। এখানে মানুষ বুদ্ধকে দেখানো হয়নি। একটি সিংহের মুখ ও বুদ্ধের পা তাঁর উপস্থিতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটা সেইসময়কার যখন বুদ্ধের চিত্রণ শুরু হয়নি।
৭) আটজন বুদ্ধ: ছয়জন অতীত বুদ্ধ, একজন শাক্যমুনি বুদ্ধ অর্থাৎ ঐতিহাসিক মানুষ বুদ্ধ, একজন ভবিষ্যতের মৈত্রেয় বুদ্ধ। এঁরা স্তূপ এবং পাঁচিলের মাঝে যে বৃত্তাকার পরিক্রমাপথ ছিল সেখানে আসীন ছিলেন আটদিকে। এই মূর্তিগুলি পরবর্তী যুগের, যখন বুদ্ধচিত্রণ শুরু হয়েছে।
আর ছিল জাতক ও বুদ্ধ জীবনীর নানা দৃশ্য। বেশিরভাগ ভাস্কর্যই চুনাপাথরের তৈরি।
ধমসিরি (ধর্মশ্রী?) নাম্নী এক ভিক্ষুণী এখানকার অনেক নির্মাণকার্যের সূচনা করেছিলেন বলে এখানে লিখিত আছে। স্তূপের পাশাপাশি এখানে বৌদ্ধ বিহারও ছিল।
সাতবাহন যুগে মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্র প্রদেশ জুড়ে যে পরিমাণ এবং যে মাপের বিনিয়োগ আমরা বৌদ্ধ শিল্পে দেখি তা কিন্তু সেইসময়ে কোনো হিন্দু শিল্পে হয়নি, সাতবাহনরা ব্রাহ্মণ্যধর্মী হওয়া সত্ত্বেও। ধর্ম ব্যাপারটা অশোক, কণিষ্ক ও সাতবাহনদের কাছে কোনো গণ্ডীবদ্ধ বিষয় ছিল না। এই যৌথ ধর্ম পালনের শুরু ভারতেই- মৌর্য, সাতবাহন ও কুষাণদের মাধ্যমে। সাতবাহনরা যেভাবে বৈষ্ণব ও বৌদ্ধ ধর্ম একসাথে অনুসরণ করেছিল, কণিষ্কও সেই পথে চলেই বৌদ্ধ, ইরানীয় ও শৈব ধর্ম একসাথে অনুশীলন করেছিলেন। এই ধারা অনুসরণ করেই মহাযান বৌদ্ধ ধর্মের সঙ্গে স্থানীয় সনাতন ধর্মের যৌথ পালন এখন অনেক দেশেই দেখা যায়- জাপান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম। এই যৌথ ধর্ম পালন এবং বহু গুরুত্বপূর্ণ শিল্পবস্তুর সাক্ষী হয়ে আছে পুরো কৃষ্ণা-গোদাবরী উপত্যকা আর তার মাঝেই কনগনহল্লি স্তূপ।
তথ্যসূত্র:
মহাবোধি নিয়ে লেখকের অন্য লেখার: মহাবোধি মন্দিরের বিবর্তন-অনুসন্ধানীর চোখে
- Veluthat, Kesavan. “THE SANNATHI INSCRIPTIONS AND THE QUESTIONS THEY RAISE.” Proceedings of the Indian History Congress 60 (1999): 1081–86.
2. https://en.wikipedia.org/wiki/Kanaganahalli
3. https://en.wikipedia.org/wiki/Sannati
4. Amaravati: The Art of an Early Buddhist Monument in Context, Edited by Akira Shimada and Michael Willis
5. Relics and Relic Worship in Early Buddhism:India, Afghanistan, Sri Lanka and Burma, Edited by Janice Stargardt and Michael Willis
6. https://karnatakatravel.blogspot.com/2014/03/ashokan-major-rock-edict-of-sannati.html?m=1